ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনার যদি না জানা থাকে।তাহলে আজকের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন।অনেকেই ডুমুর খেতে বেশ পছন্দ করে থাকেন এবং কম বেশি সবাই ডুমুর খেয়ে থাকেন কিন্তু ডুমুর খাবার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেরই তেমন কোন ধারণা নেই। তাই আজকে আমি এই সম্পর্কে সঠিকভাবে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব। এবং মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটি পড়ুন।
ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা  ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
আপনি যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়তে আগ্রহ হন। তাহলে, ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা ও নিয়ম সম্পর্কে, ডুমুরের পুষ্টিগুণ, দেশি ডুমুরের উপকারিতা ও বিস্তারিত জানতে পারবেন। এর সকল বিষয়ে সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন।

ভূমিকা

সুস্বাস্থ্যের জন্য এবং রক্তের শর্করার বজায় রাখার জন্য, এ বিষয়ে ডুমুর বেশ সাহায্য করতে পারে। ডুমুরে এমন উপাদান রয়েছে যা রক্তের শর্করার কে নিয়ন্ত্রণ করতে ও ইনসুলিন নিঃসরণ বাড়াতে সহায়তা করে থাকে। ডুমুর থেকে যোগ হওয়া বেস্ট ফাইবার রক্তে শর্করার ভালো রাখায় ব্যবস্থাপনায় বেশ অবদান রাখে। ডুমুর এমন একটা সবজি যা অনেকেই পছন্দ করে থাকেন। আবার অনেকের খেতে খুব পছন্দ করেন। কিন্তু সবাই ডুমুর খেয়ে থাকলেও ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানেনা।তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

ডুমুর ফল খাওয়ার নিয়ম

ডুমুর ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি ও উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। কিন্তু ডুমুরের ফল খাওয়ার সঠিক নিয়ম অনেকেই জানেনা। চলুন জেনে নেওয়া যাক তোমার ফল খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত।

  • ডুমুরের কাচা ফল বেশ উপকারী সবজি। ডুমুরের সাথে আরো অন্যান্য সবজি মিশিয়ে এটি ভাজি অথবা তরকারি রান্না করা যায়।
  •  ডুমুরের ভর্তা বেশ সুস্বাদু এবং উপদেয় খাদ্য।
  • আলু অথবা ছোট মাছের সঙ্গে ডুমুরের ঝোল অথবা চচ্চড়ি করতে পারেন।
  • ডুমুর কাঁচা খাওয়া যায় এতে অনেক পুষ্টি রয়েছে।
  • ডুমুরের পাতা, বাকল ও মূল এবং নির্যাস দিয়ে বিভিন্ন ওষুধ তৈরি করা হয়।

ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা

ডুমুর খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে, আসুন জেনে নেওয়া যাক ডুমুর খাওয়ার উপকারিতার সম্পর্কে বিস্তারিত।

হাড় শক্তিশালী করেঃ আমাদের হাড়ের যত্নে ডুমুর বেশ প্রয়োজন। ডুমুর খাওয়ার ফলে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাসের মত গুরুত্বপূর্ণ আরো পুষ্টি সবারহ করে থাকে। এবং আমাদের হাড়ের শক্তি বাড়ায়। ডুমুরের ক্যালসিয়াম উপাদান হাড় সম্পর্কিত অসুস্থতা থেকে রক্ষা পেতে আমাদেরকে সাহায্য করে থাকে।


ওজন নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করেঃ  আপনি যদি অতিরিক্ত মেদ ভুড়ি কমাতে চান তাহলে ডুমুর একটি মূল্যবান আপনার সহযোগী হতে পারে। কারণ ডুমরে রয়েছে ফাইবার উপাদান যার স্বাস্থ্যকর পাচনতন্ত্র বজায় রাখতে বেশ সাহায্য করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকে। তোমার খাওয়ার ফলে তা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পেট ভরিয়ে রাখে। যে কারণে ঘন ঘন খাবার খাবার অভ্যাসও কমে থাকে। এটি আপনার জন্য বেশ ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে।

ভেজানো ডুমুর কেন খাবেনঃ ৩/৪ টা ডুমুর সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালবেলা সেই ভেজানো ডুমুর গুলো পানিসহ খেয়ে ফেলুন। এতে মিষ্টি জাতীয় স্বাদ গ্রহণ করতে চাইলে আপনার গ্লাসের কিছুটা মধু যোগ করতে পারেন। আপনার দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় যোগ করুন। কারণ এটি আপনার জন্য অনেক উপকারী যার ফলে সুস্থতা বাড়াবে।

ডুমুর ত্বকের জন্য উপকারী

ডুমুর একটি সুস্বাদু সবজি এবং এর পাশাপাশি এর ঔষধি কিছু গুণ রয়েছে। ডুমর আমাদের শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি আমাদের ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। ডুমুর খাওয়ার ফলে ত্বক ভালো রাখে, তোকে ফোড়া এবং চর্মরোগ নিরাময় করতে কাজ করে থাকে। ডুমুর ব্যবহার করার ফলে জন্মের বিবর্ণ তা দূর হয়ে থাকে। ডুমুর গাছের ছাল সিদ্ধ করে যদি পানি দিয়ে সেই ত্বক ধুলে চর্মের বিবরণ তো দূর করতে সহায়তা করে। আবার ডুমুর পেস্ট করে মুখে মাখলে তা ব্রণ প্রতিরোধ থেকে সহায়তা করে।

কাঁচা ডুমরে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। যা আপনি এটি দ্বারা ফেস মাস্ক তৈরি করতে পারেন। আপনি চাইলে ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও এটি ব্যবহার করতে পারেন।

১/২ টেবিল চামচ দই যোগ করুন। এই আপনি মাস্কটি ২০/২৫ মিষ্টির জন্য মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে রেখে দেন। তারপর হালকা হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে ফেলুন। দই এবং ডুমুরের পেস্ট ত্বকে একত্রিত ভাবে লাগালে ত্বক দেখতে উজ্জ্বলতা ও প্রাণবন্ত লাগে।

দেশি ডুমুরের উপকারিতা

দেশি ডুমরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম আমাদের শরীরে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। বেশ কিছু গবেষণায় জানা গেছে যে এর ডুমুরের উপস্থিত এসিড রক্তের শর্করার মাত্রা কমাতে সহায়তা করে থাকে।যেসব ব্যক্তিদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা এই ডুমুর ফল ভিজে খেলে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ হয় খুব সহজে। আপনি কাঁচা অথবা সালাতের সঙ্গে মিশ্রণ করে এই ডুমুর ফল খেতে পারেন।
দেশি ডুমুর উপকারিতা রয়েছে তা নিচে দেওয়া হলো।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ঃ ডুমুর খাওয়ার অনেক পুষ্টিগুণ উপকারিতা রয়েছে। এবং এটি জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রনের মত খনিজ পদার্থ পাপয়ার হাউস ইত্যাদি। ডোমরে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ফাইবার। তাই অনেক বিশেষজ্ঞ জানান যে, যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের রোগ রয়েছে তাদের ডুমুর খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যার ফলে মলত্যাগ স্বাভাবিক ও শিথিল করে থাকে। এবং অন্তরকে সুস্থ রাখতে ডুমুর খাওয়া উচিত।

হাড় মজবুত রাখতেঃ ডুমুরে রয়েছে ক্যালসিয়ামের একটি প্রধান্য শক্তিশালী উৎস। যার কারণে এটি আপনার হাড়কে সুস্থ ও শক্তিশালী করতে সহায়তা করে।সইরে নিজে থেকে ক্যালসিয়াম তৈরি করে থাকে না তাই বাহিক উৎস, যেমন দুধ সয়া সবুজ শাকসবজি এবং ডুমুরের ওপর নির্ভর করতে হয়। এর মধ্যে প্রাকৃতিক সব থেকে সেরা উপাদান হলো ডুমুর।

হার্ট সুস্থ রাখেঃ ডুমুরে উপস্থিত রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এবং শরীর থেকে ফ্রি রডিক্যাল দূর করতে সহায়তা করে। এবং ফলস্বরূপ করোনারী ধমনীতে বাধা রোধ করে থাকে এবং হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্যের জন্য উন্নতি ঘটাতে পারে। গবেষণা করে দেখা গেছে যে ডুমুরের লাল অংশ শরীরের ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে সহায়তা করে। যা কার্ডিওভাসকুলার সমস্যার একটি প্রধান কারণ।

ডুমুরের পুষ্টিগুণ

প্রতি ১০০ গ্রাম ডুমুরের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে তার নিচে দেওয়া হলো।
  • খাদ্য শক্তি -৩৭ কিলোক্যালরি
  • খনিজ পদার্থ -০.৬ গ্রাম
  • আমিষ-১.৩ গ্রাম
  • চর্বি -০.২ গ্রাম
  • ফাইবার -২.২ গ্রাম
  • শর্করা-৭.৬ গ্রাম
  • ক্যালসিয়াম -৮০ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন বি১ -০.০৬ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন বি২ - ০.০৫ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন সি - ৫ মিলিগ্রাম
  • ক্যারোটিন -১৬২ মিলিগ্রাম
  • ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড - omega 3 fatty acid

ডুমুরের অপকারিতা

ডুমুরের ফুল ও ডুমুরের ফলের উপকারিতা অনেকেরই অজানা, চলুন জেনে নেওয়া যাক ডুমুরের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত।

  • অনেকেরই আবার ডুমুরের আঠা বা কষে এলার্জি হতে পারে।
  • অতিরিক্ত মাত্রায় ডুমুর খেলে পেট খারাপ হতে পারে।
  • কিছু ওষুধের সঙ্গে ডুমুর প্রতিক্রিয়া করতে পারে।
  • অনেক সময় ডুমুর রক্ত পাতলা করে ফেলতে পারে। এবং অস্ত্রপচারে আগে ডুমুর না খাওয়াই উচিত।
ডুমুর ফলের অনেক উপকারিতা রয়েছে । ডুমরে রয়েছে প্রত্যেকটি প্রাকৃতিক উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তবুও বরাবর মতো বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে ডুমুরের ব্যবহার করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আমরা উপর থেকে ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। আশা করি আমি আপনাদেরকে সঠিকভাবে ধারণা দিতে পেরেছি।

আসলে ডুমুর হচ্ছে একটি প্রাকৃতিক সবজি যা অনেকেই পছন্দ করে খেয়ে থাকেন। এসব্জিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিতে ভরপুর উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। তাই আপনি আপনার ডায়েট কেটে ডুমুর সবজি হিসেবে ডাকতে পারেন। কারণ এটি শুধু আমাদের ত্বকের জন্য বেশ উপকারী।

ডুমুর যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে তাই যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তারা ডুমুর থেকে দূরে থাকাই উচিত।

আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন আপনাদের মতামত। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url