চিংড়ি মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

চিংড়ি মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনার যদি জানা না থাকে। তাহলে আজকের আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। অনেকে চিংড়ি মাছ খেতে খুব পছন্দ করে।এবং চিংড়ি মাছ দিয়ে বিভিন্ন তৈরি করা আইটেম ও তরকারি পছন্দ করে। কিন্তু চিংড়ি মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেরই তেমন ধারণা নাই। তাই আজকে আমি আপনাদের এই সম্পর্কে সঠিকভাবে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব। তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
চিংড়ি মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলটি পড়তে আগ্রহী হন। তাহলে চিংড়ি মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা, বাচ্চাদের জন্য চিংড়ি মাছের উপকারিতা, চিংড়ি মাছ কত প্রকার, চিংড়ি মাছের বৈশিষ্ট্য, চিংড়ি মাছ খেলে কি হয়? এই সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন।

ভূমিকা

দেশি চিংড়ি বা বাগদা চিংড়ি, আমাদের বেশ পছন্দের একটি খাবার। তবে চিনি নিয়মিত খেলে পারে স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যেতে পারে। সেসব বিষয়ে হয়তো বা আমাদের অনেকেরই ধারণা নাই। আমরা চিংড়ি মাছের বিভিন্নভাবে তরকারি রান্না করে খেয়ে থাকি। আবার অনেকে আছেন চিংড়ি মাছের চপ খেতে বেশি ভালবাসেন। তবে এই সুস্বাদ চিংড়ি মাছ খেতে ভালো লাগলো এর অনেক উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ রয়েছে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক চিংড়ি মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিত।

গর্ভাবস্থায় চিংড়ি মাছের খাওয়া যাবে কি?

গর্ভাবস্থায় নারীদের খুব সচেতন থাকতে হবে। কারণ এ সময়ে চলাফেরা, জীবনধারা ও খাদ্যের ব্যাপারে ব্যায়াম ইত্যাদি এসব বিষয় নিয়ে সচেতন হলে অপ্রত্যাশিত অনেক ঝুঁকি থেকে এরানো সম্ভব হয়। অনেকে আছেন কিছু কিছু খাবার এ সময় এড করেন, আবার অনেকে রয়েছেন কিছু কিছু খাবার ডায়েট চ্যাট থেকে বাদ দেন।আবার কিছু কিছু খাবার নিয়ে থাকেন দ্বিধা গ্রস্ত। এমনই এক খাবার চিংড়ি।

চিকিৎসা মতে হবু মায়েদের জন্য এটি বিশেষভাবে ডায়েটের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এবং চিকিৎসকরা জানান যে, গর্ভাবস্থায় মহিলাদের শারীরিক অবস্থা যদি স্বাভাবিক থাকে এবং এলার্জির সমস্যা যদি না থাকে তাহলে নিশ্চিন্তে এই মাছ খেতে পারেন।

তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় চিকিৎসকরা জানান যে, গর্ভবতী মায়েদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে সামুদ্রিক যে কোন মাছ খেতে নিষেধ করে থাকেন। তবে এমন কোন পরিস্থিতিতে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ সামুদ্রিক মাছের ভিতরে চিংড়ি মাছ রয়েছে কিনা এটা জানা খুবই দরকার। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চিকিৎসক চিংড়ি মাছ খাওয়ার পরামর্শই দিবেন।

গর্ভাবস্থায়, ও গর্ভবতী মায়েদের চিংড়ি খাওয়া বেশ উপকারী। গবেষণায় বলেছে, চিংড়িতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন, ভিটামিন বি১২ ভিটামিন ডি, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়ামে মতো আরো পুষ্টিগুণ। যা গর্ভাবস্থা মহিলাদের সন্তানের শরীরের রক্তসভার ও স্বাভাবিক রাখে। এবং শিশুর সুগঠন নিশ্চিত করে থাকে। গর্ভাবস্থায় প্রসবংক্রান্ত ঝুকেও কমায়।

চিংড়ি মাছ কত প্রকার

বিশ্বে প্রায় রয়েছে ৪০০ প্রজাতির চিংড়ি। এবং বাংলাদেশের রয়েছে ৭০০টি প্রজাতি চিংড়ি। তবে সবথেকে বেশি বাংলাদেশের চাষ হয়, বাগদা, চাকা, হরিণ ও গলদা চিংড়ি।

চিংড়ি মাছের উপকারিতা

চিংড়ি মাছের রয়েছে বেশ পুষ্টিকর উপকারিতা। যা উচ্চ আয়োজনের পুষ্টি সরবরাহ করে যা অন্যান্য খাবারে প্রচুর পরিমাণে থাকেনা। আবার অন্যদিকে চিংড়ি উচ্চ কোলেস্টরেল সামগ্রীর কারণে এটি অস্বাস্থ্যকর। তবে চিংড়ি মাছের অনেক উপকারিতা রয়েছে তা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
  • ক্যালরি
  • প্রোটিন
  • সেলেনিয়াম
  • ।আয়রন
  • ফসফরাস
  • নিয়াসিন
  • জিংক
  • ম্যাগনেসিয়াম
  • আয়োডিন
হার্টের স্বাস্থ্য উন্নতিঃ চিংড়িতে রয়েছে খুব কম পরিমাণে ক্যালরি। এবং এতে কোন কার্বোহাইড্রেট থাকে না। এবং চিংড়ির প্রায় ৯০% ক্যালোরি প্রোটিন থেকেই আসে। এবং বাকিগুলো আসে চর্বি থেকে। এবং চিংড়ি বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ সংগ্রহ করে থাকে।যা প্রদাহ কমাতে এবং আমাদের হার্টকে স্বাস্থ্য উন্নতি করতে সাহায্য করে। এবং চিংড়ি খুব পুষ্টিকর খাবার। এতে ক্যালোরি কম পরিমাণে থাকায় বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সরবরাহ করে আমাদের হাতকে উন্নত করতে সহায়তা করে। এবং চিংড়িতে রয়েছে ওমেগা থ্রী ফ্যাটি অ্যাসিড, যা উচ্চ তাপমাত্রা রক্ত প্রবাহ ক্ষতিকারক কোলেস্টের দূর করে থাকে। এবং হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা থেকে আরো কমাতে সাহায্য করে।

আয়োডিন ঘাটতি কমায়ঃ চিংড়ি মাছ খাওয়া আয়োডিনের খাদ্য হিসাবে চিংড়ির বিশেষ একটি উৎস। এবং চিংড়ি মাছ মানুষের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খনিজ ঘাটতি পূরণ করে থাকে। যা থাইরয়েড ফাংশন আমাদের মস্তিষ্কের জন্য আয়োডিন ও গুরুত্বপূর্ণ। চিংড়িতে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যা, এটি ভালো উৎস।এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা হিসেবেও সাহায্য করতে পারে।

কার্ডিওভাসকুলার রোগ ঝুঁকি প্রতিরোধ করেঃ চিংড়ি মাছ কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এবং চিংড়ির পেস্টে পাওয়া যে এনজাইমটি রয়েছে, তা কার্ডিওভাসকুলার রোগের বিপরীত বিরুদ্ধে লড়তে এটি শক্তিশালী হাতিয়ার। তাছাড়াও এটি মাসিকের ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে।

গলদা মাছের বৈশিষ্ট্য

গলদা চিংড়ি মাছের বৈশিষ্ট্য রয়েছে তা সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
  • গলদা চিংড়ির চাষের ক্ষেত্রে নির্বাচিত ঘেরে ৫-৬ মাস ৩.০-৪.০ ফুট উচ্চতায় পানি ধরে রাখার সুবিধা থাকা লাগবে।
  • এবং ঘেরের মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা বেশি থাকতে হবে। যাতে করে অল্প সময়ে ঘের শুঁকিয়ে না যায়।
  • সাধারণত দো- আঁশ অথবা বেলে দো আঁশ এসব মাটি চিংড়ি চাষের জন্য বেশ উপযুক্ত।
  • অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে ঘের একটু নিচু জায়গায় হলে এর পানি ধরে রাখার ক্ষমতা ভালো হয়।
  • ঘেরে বন্যার পানি মোটেও প্রবেশ করতে না পারে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এবং বন্যা বা বৃষ্টিরপানিতে বাঁধ যেন প্লাবিত না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে।
  • ঘেড়ের আকার ৩০-১০০ শতাংশ হলে এর ব্যবস্থাপনার জন্য সুবিধা হয়।
  • ঘেড়ে যথেষ্ট পরিমাণে সূর্যের আলো পড়তে হবে।

চিংড়ি মাছ কি খায়?

চিংড়ি মাছ পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য, তাছাড়াও আরও কুকুরের প্রাকৃতিক খাদ্য রয়েছে যেমন ভাসমান ছোট ছোট উদ্ভিদ ও জুপ্লাংকটন, কাকড়া, ঝিনুক ও শামুকের বাচ্চা, ছোট মাছ মাছের ডিম, মৃত জলজ প্রাণী এবং পচা অংশ ইত্যাদি এসব গলদা চিংড়ির খাদ্য।

এবং চিংড়ি তিন প্রকারে বাজারের দেখা যায় যেমন গলদা বাগদা ও ও হরিণী চিংড়ি। এবং চিংড়ি মাছ খেতে সবাই পছন্দ করে এবং এটি অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার

চিংড়ি মাছের অপকারিতা

উচ্চ কোলেস্টরলের মাত্রাঃ চিংড়িতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় কোলেস্টরেল। এবং চিংড়ি প্রায় এর উচ্চ কোলেস্টরেল সামগ্রীর জন্য খারাপ রেপ পায়।এবং অন্যান্য মাছের তুলনামূলকভাবে সামুদ্রিক খাবারে কোলেস্টরেল পরিমাণ এর চেয়ে প্রায় ৮৫% বেশি। তাছাড়া ও কোলেস্টেরল যুক্ত খাবারগুলো আপনার শরীরে রক্তে কোলেস্টের মাত্রা এবং হৃদরোগ বাড়ায় থাকে। এবং আমাদের রক্তের বেশিরভাগ কোলেস্টল লিভার দ্বারা উৎপাদিত হয়ে থাকে। এবং আপনি যখন উচ্চ কোলেস্টেরল মাত্র খাবার গ্রহণ করেন তখন লিভার কম উৎপাদন হয়ে থাকে।

চিংড়িতে এলার্জিঃ চিংড়িতে অনেক এলার্জি রয়েছে।এবং চিংড়িতে ট্রপোমায়োসিন নামক একটি প্রোটিন রয়েছে যা এলার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এবং চিংড়ির এলার্জির লক্ষণ রয়েছে, এটি খাবার পরে মুখের মধ্যে খিঁচুনি, অজ্ঞানতা, হজমের সমস্যা, নাক বন্ধ হওয়া বা ত্বকের প্রতিক্রিয়া, এবং গা চুলকানি হতে পারে। তবে আপনার অ্যালার্জি জনিত যদি কোন রোগ হয়ে থাকে। তাহলে আপনাকে চিংড়ি খাওয়া থেকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চলতে হবে।

আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় চিংড়ি রান্নার বাষ্প প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে থাকে। তাই এমন পরিস্থিতি এড়াতে হবে। এবং যেখানে তারা প্ররক্ষভাবে এর স্পর্শ না আসতে পারে সে খেয়াল রাখতে হবে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক উপর থেকে আমরা চিংড়ি মাছের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। আশা করি আপনাদেরকে সঠিক ধারণা দিতে পেরেছি।

চিংড়ি মাছে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণে ভরপুর যা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। মাছ খাওয়ার ফলে আমরা অনেক রোগ থেকে প্রতিরোধ করে থাকে। তাই চিংড়ি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ কার্যকরী। তাই আপনি চাইলে চিংড়ি মাছ নিয়মিত খেতে পারেন। আশা করি উপকৃত হবেন।

আশা করি আমার এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে আপনার মতামত জানায় দিবেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url