পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করব। এই রোগটি সাধারণত কম বেশি সবারই দেখা যায়। এর আগে অনেক মানুষ এই রোগে ভুগলেও চিকিৎসা ও ডাক্তারের কাছে যেতে লজ্জা বোধ করে পাইলস একটি স্বাস্থ্য জনিত রোগ। এই রোগটি সবার কাছে পরিচিত। 
পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
অনেকে আবার অশ্ব হিসেবে চিনে থাকে। ক্ষেত্র বিশেষ করে পাইলসের সঠিক চিকিৎসা বদলে হোমিওপ্যাথি ও কবিরাজ এসব নানা ধরনের টোটকা গ্রহণ করে থাকেন। যার কারণে পাইলস আরো জটিল আকার ধারণ করে থাকে। তাই আপনাকে সঠিকভাবে পাইলস বা অশ্ব এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে সঠিকভাবে চিকিৎসা নিতে হবে। আসুন জেনে নেওয়া যাক পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে।

ভূমিকা

পাইলস একটি জটিল রোগ। বর্তমান সময়ে এ রোগের অনেক মানুষ আক্রান্ত হয়। বিশেষজ্ঞ মতে এ রোগটি নোপথে খাদ্য অভ্যাস ও ভুল ত্রুটি জীবনযাত্রা থেকে হয়ে আসে। পাইলস একটি গুরুতর রোগ। এবং এ রোগের জ্বালাপোড়া প্রচন্ড পরিমাণে হয়ে থাকে, মলদার থেকে রক্ত পড়া, ব্যথা ফুলে যাওয়া, নানা সমস্যায় রোগীরা ভুগেন।এবং পাইলস সম্পর্কে চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নিতে গেলে রোগীরা লজ্জাবোধ করেন। কি করবেন কি ওষুধ খাবে কি করলে ভালো হবে এই চিন্তায় রোগী আরো বেশি দুশ্চিন্তা হয়ে থাকে। যারা পাইলস এর রোগে ভুগছেন তাদের জন্য এটি বেশ কার্যকরী কিছু টিপস, পাইলসের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে এখান থেকে জেনে নিন

পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায়

পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় সম্পর্কে নিচে দেওয়া হলো।

মুলার জুসঃ মুলা এমন একটি শাকসবজি যেটা আমাদের ঘরে থাকে।এবং এই সবজিগুলো পাইলস বা অশ্বের ক্ষেত্রে খুব ভালো উপকারী। নিয়ম অনুযায়ী যদি মলারস খাওয়া যায় তাহলে পাইলসের এই সমস্যা থেকে অনেক টা উপকার পাবেন। তবে প্রথম দিকে মোলার রস খেতে একটু সমস্যা হতে পারে, তবে চার ভাগের এক ভাগ মুলার রস খাবেন।এরপর আস্তে আস্তে আপনি বাড়িয়ে হাফ কাপ পর্যন্ত খেতে পারেন। এবং আপনি যদি এই মুলার রস নিয়ম অনুযায়ী খেয়ে থাকেন তাহলে এই পাইলস বা এই সমস্যা থেকে অনেকটা সমাধান পেতে পারেন।

লেবু আদার রসঃ পাইলসের প্রধান কারণই হচ্ছে ডিহাইড্রেশন। তবে আপনি যদি লেবুর রস ও আদা একসঙ্গে মিশ্রণ করে তার মধ্যে এক চামচ মধু দিয়ে যদি দিনে দুই থেকে তিনবার পান করেন তাহলে দেখবেন আপনার পাইলসের সমস্যা থেকে অনেকটা উপকার পাবেন। কারণ হচ্ছে এই শরবত আমাদের শরীরে হাইড্রেট করতে সহায়তা করে। এবং সেই সাথে সাথে পাইলসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

কি খেলে পাইলস ভালো হয়

পাইলস অথবা অসহায় রোগে অনেকে ভুগে থাকেন। এবং অনেক মানুষ চিন্তিত হয়ে পড়েন কি খেলে পায়েস ভালো হবে বা কি করলে এটি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। আসন জেনে নি কি খেলে পাইলস ভালো হয়।

কি খাবেনঃ দ্রব্যনীয় ফাইবার যুক্ত যে সমৃদ্ধ খাবার গুলো রয়েছে, যেমন ফল, শাকসবজি এগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। যার ফলে অশ্ব রোগীদের কষ্টটা অনেকটা কমতে পারে। এবং ফাইবার অন্তর স্বাস্থ্যের রক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

  • সর্বপ্রথম প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। অতিরিক্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়ার ফলে শরীরে ভারসাম্য বজায় থাকে এবং মল নরম হয়ে থাকে।
  • এবং ডাল, মটরশুঁটি ও এজাতীয় খাবারগুলো অর্শ রোগীদের জন্য বেশ উপযোগী।
  • আপনি এর পাশাপাশি হল গ্রেন থেকে বিভিন্ন তৈরি খাদ্য খেতে পারেন। এবং তার সাথে ঢেঁকিতে ছাটা চাল ও খেতে পারেন।
  • কলা নিয়মিত খেতে পারেন।
কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন
  • এসব খাবারের মধ্যে ফাইবার কম রয়েছে সেই খাদ্যগুলো এড়িয়ে চলাই উচিত। এবং বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাতকরণ, দানা শস্য খাওয়ার ফলে সমস্যা বাড়তে পারে।
  • দুধ অথবা পানিও, এবং চিজের মতো দুগ্ধ জাত খাবারগুলো অল্প পরিমাণে খেলে অনেক উপকার মিলবে।
  • বিশেষজ্ঞদের মতে জানান যে পাইলস বা অশ্ব এসব রোগীদের মাংস খাওয়া মোটে উচিত না। কারণ এতে বাজার চালিত প্রক্রিয়াজাতগুলো মাংস বাড়িয়ে দিতে পারে অর্শের সমস্যা।
  • আবার অতিরিক্ত তেল ভাজাপোড়া এসব খাওয়া মোটেও উচিত না। এসব খাবার অত্যাধিক তেল মশলা লবণ যা আমাদের পেটের গোলযোগের কারণ হতে পারে।
  • সর্বশেষ একটি কথা ধূমপান ও মদ্যপান মোটেও খাওয়া উচিত না। এবং এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা

পাইলস এমন একটি রোগ যেখানে মলদ্বারের ভিতরে অথবা বাইরে মলদ্বারে বা নিম্ন স্নায়ুতে ফুল কুড়ি হয়ে থাকে।এটি বিভিন্ন কারণেই হয়ে থাকে, যেমন বংশগত কোষ্ঠকাঠিন্য এবং কম ফাইবার ডায়েট,স্থলতা খাদ্য এলার্জি শারীরিক কার্যকলাপের অভাব ও গর্ভাবস্থায় ইত্যাদি।এ রোগের কিছু সাধারণত লক্ষণ হচ্ছে মলদ্বার চারপাশে গুটি গুটি রক্ত বাঁধে, এবং মলদ্বারের সময়তে রক্ত পাত হয়।এবং মালদার করার সময় আশপাশের প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হতে থাকে।

অর্শ রোগ খুবই সাধারণ একটি সমস্যা যা কমবেশি সবারই এ রোগটি হয়ে থাকে।তবে দীর্ঘ সময় ধরে এ চিকিৎসা না করা হলে, এটা থেকে রক্ত ক্ষয় টিস্যু মৃত্যু এবং এমনকি পায়ুছিদ্রে বা কলোরেকটর ক্যান্সারের মতো রোগে পরিণত হতে পারে।তবে পাইলস রোগে কিছু ঘরোয়া প্রতিকার রয়েছে যা কার্যকর, এ থেকে দ্রুত আরাম দিতে পারে এবং চুলকানি ও ব্যথা কমাতে সহায়তা করে।পাইলস রোগে ঘরোয়া উপায় ও প্রতিকার সম্পর্কে আসুন জেনে নেওয়া যাক।

অর্শ রোগের জন্য ঘরোয়া কিছু প্রতিকার

অ্যালোভেরাঃ অ্যালোভেরা হচ্ছে অর্শ রোগের জন্য প্রকৃতির খুব ভালো একটি উপাদান। এবং অ্যালোভেরার রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা, এবং থেরাপিউটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা অসুরকে জ্বালা পুড়া কমাতে সহায়তা করে। অ্যালোভেরা অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত ভাবে অশ্ব রোগের জন্য এটি ব্যবহার করা যাবে। অতএব আপনি পাইলস রোগের চিকিৎসার জন্য আপনার মলদ্বারের ওপর অ্যালোভেরা জেল একটু একটু করে লাগান এবং ম্যাজাস করুন।দেখবেন এ থেকে অনেকটা ব্যথা জ্বালা পোড়া ও চুলকানির থেকে মুক্তি পাবেন।

জলপাইয়ের তেলঃ জলপাইতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের বৈশিষ্ট্য, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটা বেশি,এবং এটি বহিরাগত অর্শ রোগের চিকিৎসা জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। এবং এটি রক্তনালীর স্থিতিস্থাপক তা যা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যার ফলে এটি ব্যথা কমাতে সহায়তা করে এবং পায়ু ছিদ্রের মধ্যে রক্তনালীর আকার হ্রাস করতে সহায়তা করে থাকে। 

পাইলস এর লক্ষণ 

পাইলস রোগ কিভাবে বুঝবেন এই লক্ষণ গুলো কি কি, আমরা অনেকে বুঝে উঠতে পারি না।আপনি এই ক্ষেত্রে পায়ুর শীরা মলদ্বারে চারপাশে ত্বকের  নিচে ফুলে ওঠা এবং অসহ্য ব্যথা। এসব লক্ষণ এবং উপসর্গ গুলো নিচে দেওয়া হলো।
  • পায়ু  অঞ্চলের দিকে চুলকানি বা জ্বালা পোড়া হয়। 
  • পায়ু দ্বারে  ব্যাথা বা অস্বস্তি বোধ হয়। 
  • মলদ্বারে চারপাশে ফোলা ভাব হয়ে থাকে। 
  • মলদ্বারের সময় রক্তপাত হয়। 
  • মাটিতে অথবা কোন জায়গায় বসতে গেলে, চাপ লেগে ব্যথা সৃষ্টি হয়। 
  •  মলদ্বার জায়গাতে চুলকানি হয়।
  • এবং মলদ্বারের কাছে সংবেদনশীল বা বেদনাদায়ক পিন্ডের  উপস্থিতি। 

লেখকের মন্তব্য

পরিশেষ এটাই বলতে চাই যে, আপনারা ঘরে বসে থেকেই পাইলস অথবা অশ্ব সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারবেন। এটা তেমন একটি রোগ হচ্ছে এটার ঘরোয়া কিছু চিকিৎসা রয়েছে যা পাইলসের জন্য বেশ কার্যকর। আপনি যদি একটু নিয়ম অনুযায়ী মেনে চলেন তাহলে আপনার পাইলস বা অর্শ এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আজ আপনারা আমার আর্টিকেলটি পড়ে জানতে পারবেন ঘরোয়া উপায়ে পাইলস বা অশ্ব কিভাবে নিয়ন্ত্রণ রাখা যায় ও কমানো সম্ভব। পাইলস হলে এখানে চিন্তার কোন কারণ নাই। আশা করি ভালো লেগেছে ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url