দুধ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
দুধ আমাদের সকলের কাছে খুব পরিচিত। দুধ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকে আলোচনা করবো।আমরা সবাই দুধ খেতে খুব ভালবাসি এবং পছন্দ করি।তবে দুধ খাওয়ার ফলে কি কি উপকারিতা রয়েছে এবং কি কি অপকারিতা রয়েছে তা আমরা অনেকেই জানিনা, যেগুলো আমাদের জানা খুবই প্রয়োজন।
আমরা দুধের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য খুঁজে পাই না।কারণ দুধ খাওয়ার আগে আমাদের অবশ্যয় এর গুনাগুন ও উপকার জানা প্রয়োজন।আজ তাদের জন্য , নিয়ে আসলাম দুধ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
ভূমিকা
দুধ কম বেশি সবাই পছন্দ করে করেন।দুধে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে যে আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী। এবং দুধ গুরুত্বপূর্ণ যা পুষ্টি প্রোটিনের দিক থেকে একটি দুর্দান্ত উৎস। যা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী পানীয়। দুধে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিনএ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি ১২, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস ইত্যাদি, এসব উপাদান আমাদের শরীলকে পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করে।তাহলে জেনে নিই দুধ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
রাতে দুধ খাওয়ার উপকারিতা
যুগ যুগ ধরে কথাগুলো প্রচলিত হয়ে আসছে। রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই এক গ্লাস গরম দুধ খাওয়া খুব জরুরী। কিন্তু কেন এ কথাগুলো বলা হয়, এবং কি হয় গরম দুধ খেলে?
আগে কথাগুলো মা বোন বলতেন, আর এখন বর্তমান সময়ে পরামর্শ চিকিৎসরাও দিয়ে থাকেন। এক গ্লাস দুধ খেলে নাকি অনেক সমস্যা আর সমাধান করে দিতে পারে। এবং সম্প্রতি আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির জার্নাল অফ এগ্রিকালচার এন্ড ফুড কেমিস্ট্রি, প্রকাশিত একটি গবেষণায় এ তথ্য জানিয়েছেন।
দুধের হয়েছে ট্রিপটিক হাইড্রোলাইট সেট নামক একটি উপাদান। যার ফলে আমাদের শরীরে ক্লান্ত মানসিক চাপ দূর করতে সহায়তা করে। এবং তাড়াতাড়ি ঘুম চলে আসে,এর পাশাপাশি দুধে এমন কিছু প্রোটিন রয়েছে যা মানুষের উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। আমাদের শরীর ও মন দুটোই শান্ত রাখতে সাহায্য করে, এর প্রভাবে ঘুমও ও তাড়াতাড়ি আসে।
দুধ খাওয়ার উপযুক্ত সময়
ডায়েট করার ক্ষেত্রেও দুধের কোন বিকল্প নেই। যাদের অ্যাসিটির সমস্যা এবং পিরিয়ডের সময় তীব্র খুব যন্ত্রণা হয়ে থাকে কাজের স্টেসে অস্থির অবস্থা দেখা দেয় এবং এ সকল সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে এক গ্লাস দুধ। আমরা যদি কয়দিন এক গ্লাস করে দুধ পান করে থাকি তাহলে অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি। সেই সাথে অবশ্যই সঠিক সময় দুধ খেতে হবে এবং সঠিক পদ্ধতিতে দুধ খেতে হবে।আসুন জেনে নেওয়া যাক।
দুধ খাওয়া সঠিক পদ্ধতিঃ দুধ খাওয়ার ফলে আপনি যদি উপকার পেতে চান তাহলে অবশ্যই কিভাবে দুধ খাওয়া যেতে পারে তা সম্পর্কে আগে জানতে হবে। আমরা বাইরের যেসব মিল্কশেক খাই তা আমাদের শরীরের জন্য বেশি উপকার আসে না। এবং আয়ুর্বেদী ও নিয়ম অনুযায়ী আম কলা তরমুজ টক জাতীয় কোন ফলের সাথে দুধ মিশিয়ে খাওয়া একদম উচিত না। এবং কলার সাথে যদি দুধ মিশ্রিত করে খাওয়া হয় তাহলে বিষাক্ত পদার্থগুলো শরীর থেকে বের হতে পারে না।
দুধ খাওয়ার সঠিক সময়ঃ যারা শইলে মার্শাল বানাতে চান তাদের সকালে দুধ খেলে বেশ উপকারী পাওয়া যায়। তাছাড়াও দুধ খাওয়ার উপযুক্ত সময় হচ্ছে রাত। অতএব রাতে দুধ খাওয়ার ফলে ঘুম ভালো হয়। যাদের নিদ্রাহীনতার সমস্যা রয়েছে তারা এ সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারবেন।
অনেকে ভেবে দেখেন যে সকালে দুধ খেলে হজমের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, কিন্তু উল্টো আপনাকে সতেজ একটা অনুভূতি দিবে সকালে দুধ খাওয়ার ফলে। পাঁচ বছর বয়সী শিশুদেরকে সকালে দুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়, কারণ এতে এসিডিটি সমস্যা হতে পারে।তাছাড়া দুধের সাথে লবণাক্ত বা কোন খাবারের যেমন নিমকি খাওয়া এসব খাবার গুলো বাদ দিতে হবে।
দুধ খাওয়ার উপকারিতা
দুধ খাওয়ার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা অনেক রয়েছে, আমরা অনেকে দুধ খেয়ে থাকলেও এর পুষ্টিগুণ অপকারিতা সম্পর্কে খুব কমই জানি। দুধে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, প্রোটিন ভিটামিন এ, নিয়ে ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি১২ নিয়াসিন ও রিবোফ্লোভিন ইত্যাদি এসব নানা পুষ্টিগণ আপনাকে সুস্থ সবল রাখতে সহায়তা করে। আসুন জেনে নেওয়া যাক দুধ খাওয়ার উপকারিতা সমূহগুলো
দুধ খাওয়ার ৭ টি উপকারিতা
- ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাড়ের গঠন মজবুত করতে সাহায্য।দুধে থাকায় ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি যাহারে শোষিত যার দাঁত ও হার শোষিত হয়ে গড়ন দূঢ় করে থাকে।প্রতিদিন এক গ্লাস পরে আপনি দুধ পান করলে, দাঁত ক্ষয়ে যাওয়া এবং দাঁতে পোকা ও হলুদ সব পরা থেকে, হাড় ক্ষয়ের এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
- প্রতিদিন এক গ্লাস করে দুধ পান করলে, আপনার অন্যান্য খাবারে চাহিদা থেকে অনেকটা কমে যায়। আপনি যদি না আসার সময় দুধ পান করে থাকেন তাহলে অনেক সময় সেটা পেটে ধরে রাখে। যার ফলে খুদা কম লাগে। এছাড়াও দুধ খাওয়ার ফলে আমাদের দেহের অনেক ধরনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে থাকে। যারা ওজন অতিরিক্ত বাড়ার সমস্যা ভুগছেন ও স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ওজন কমাতে চাইলে আপনি প্রতিদিন এর ডাইটে এই দুধ রাখতে পারেন।
- দুধে রয়েছে ভিটামিন ও মিনারেল, যার ফলে ফিটনেস বাড়ায় ও মানসিক চাপ থেকে দূর করতে সহায়তা করে। দুধ পান করার ফলে ঘুমের অর্ধক সৃষ্টি হয়, যা মস্তিষ্ক শিথিল থাকে এবং মানসিক চাপমুক্ত হয়। সারাদিনে মানসিক চাপ দূর করার জন্য এবং রাতে শান্তির ঘুম নিশ্চিত করার জন্য আপনি প্রতিদিন রাতে এক গ্লাস করে কুসুম গরম দুধ পান করতে পারেন।
- দুধ আমাদের শরীর রিহাইড্রেট করতে সাহায্য করে থাকে। যারা ডিহাইড্রেশনের সমস্যায় ভুগছেন তাদের এক গ্লাস করে দুধ পান করাটাই প্রয়োজন। তাতে সুস্থতা বোধ করবেন।
- যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে, এবং দুধ জাতীয় এলার্জি না থাকলে, রাতে ঘুমানোর আগে একা গ্লাস করে দুধ পান করতে পারেন।
- আমাদের শরীরে যদি ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের মাত্রা ঠিক না থাকলে এতে মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যাদের পেট ব্যথা ও পিরিয়ডের সমস্যা হয়ে থাকলে, একগ্লাস করে দুধ খেয়ে নিতে পারেন।
- দুধের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা মাংসপেশির গঠনে সাহায্য করে থাকে ও মাংসপেশী আড়ষ্টতা দূর করে থাকে। এবং এই তোর ব্যায়াম করার ক্ষেত্রে এক গ্লাস দুধ আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। এবং শিশুদের মাংসপেশে গঠন উন্নত করার জন্য এক গ্লাস দুধ পান করাটা উচিত।
সকালে দুধ খাওয়ার উপকারিতা
দুধ হচ্ছে একটি শোষণ পানীয়। এতে রয়েছে প্রোটিন, ফসফরাস, ভিটামিন ডি, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম এর মত অনেক উপাদান। এজন্য চিকিৎসকরা সবসময় দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়াও এনারা সব বয়সীদের ডায়েটে দুধ রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
আপনি জানলে অবাক হবেন, সারাদিনে আপনি যদি যেকোনো সময় দুধ খাওয়ার পরিবর্তে আপনি যদি সকালবেলায় খালি পেটে দুধ খান তাহলে অনেক বেশি উপকার মিলবে। এতে রয়েছে দুধে উপস্থিত সমস্ত ভিটামিন ও খনিজ দেহের সতেজ ও সংগৃহীত হবে। এতে করে আপনার শরীরে স্বাস্থ্য এর হাল ফিরতে সময় লাগবে না। অতএব আর দেরি না করে অবশ্যই প্রতিদিন নিয়মিত সকালে খালি পেটে দুধ খাওয়ার অভ্যাস করো। সকালে খালি পেটে দুধ খাওয়ার ফলে কি কি উপকার মিলবে তার সম্পর্কে একটু জেনে নিন।
হাড় হবে শক্তঃ আপনি যদি শরীরের হাড়ের জোর বাড়ানোর ইচ্ছা থাকে তাহলে দ্রুত রোজ সকালে খালি পেটে নিয়ম অনুযায়ী দুধ খেতে পারেন। এতে আপনার ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম এর চাহিদা অনেকটা মিটে যাবে। যার ফলে আপনার হাড় থাকবে সুস্থ ও সবল।
বুদ্ধির গোড়ায় শান দিতে পারবেনঃ আপনি যদি ফেলুদা বা ব্যামকোশের এর মত বুদ্ধির অধিকারী হতে চান তাহলে অবশ্যই প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস করে দুধ পান করতে পারেন। কারণ এতে রয়েছে গ্লুটাথায়ন নামে একটি অক্সিডেন্ট। আরেতে নেই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, তবে এটি মস্তিষ্কে কার্যক্ষমতা বাড়ানোর জন্য খুব ভালো সিদ্ধহস্ত। তাই আপনারা বুদ্ধির বাড়ানোর জন্য কেরামতি দেখাতে চান তারা অবশ্যই সকালে খালি পেটে দুধ খেতে পারেন তাতে অনেক উপকার মিলবে।
প্রেসার কমবেঃ যারা হাই প্রেসারে ভুগছেন, তাদের জন্য দুধ বেশ উপকারী। এই রোগটি যদি আপনি ঠিক সময়, ছাড়তে না পারেন তাহলে এটি কিডনিসহ দেহের একাধিক অঙ্গে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই যেন তেন ভাবে প্রকারেন ব্লাড প্রেসার কমাতে হবে।আর এই কাজে আপনাকে সহযোগিতা করতে পারে এক গ্লাস গরম দুধ। মেডিকেল নিউজ টুডে জানান যে কয়দিন এক গ্লাস গরম দুধ খাওয়ার ফলে প্রেসার কমে দত্তর দিয়ে ভাবে, এমনকি সাথে সুস্থ থাকবে হার্ট ও।
দুধ খাওয়ার অপকারিতা
- যাদেরকে নিতে পাথর আছে তাদের দুধের ব্যাপারে খুব সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কিডনি রোগীদের জন্য দুধ কম খাওয়াই ভালো এবং রাতে দুধ না খাওয়াটাই উত্তম।
- এবং যাদের শরীরে ল্যাক্টেজ নামক এনজাইমের অভাব গুলো রয়েছে, তাদের দুধ খাওয়া থেকে অবশ্যই সাবধান হওয়া উচিত।
- যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তারা দুধ খাওয়া থেকে সাবধান হন। কারণ এলার্জি রোগীদের দুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেন চিকিৎসকরা। অনেকের দুধ খাওয়ার এই সমস্যা ও এলার্জি আছে বলে জানা যায়।
- এবং যারা পাকিস্তানে আলচার ও গ্যাস্ট্রিক আলসারের রোগী, ছাদের মোটেও দুধ খাওয়া উচিত নয়। এ সকল রোগীদের দুধ খেলে, ব্যথা থেকে শুরু করে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- যারা পেট অপারেশন করেছেন তাদের মোটেও দুধ খাওয়া উচিত না। তখন আপনি পুরোপুরি ভাবে সুস্থ হয়ে উঠবেন তখন দুধ খেতে পারেন।
অতি মাত্রায় দুধ খাওয়া একদম উচিত হবে না। অনেকে এমন রয়েছেন যে প্রতিদিন অনেক দুধ খেয়ে থাকেন, যারা এরকম করে থাকেন তাদের অবশ্যই প্রতিদিন নিয়ম অনুযায়ী এক গ্লাস থেকে দুই গ্লাস দুধ খেতে পারেন। কারণ ওদেরকে দুধ খাওয়ার ফলে উপকারী থেকে অপকার হওয়া সম্ভব না বেশি থাকে। এবং দুধের উপকারী ও অপকারীর হিসাব করলে, দেখা যায় যে দুধের অপকারিতা বেশি পরিমাণ।
দুধের উপকারিতা ও অপকারিতা দুটো সম্পর্কেই জানলাম। দুধে যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন অপকারিতাও রয়েছে। এবং সকল দিক বিবেচনা করেই দেখা যায় যে সব থেকে উপকারের পরিমাণটাই বেশি। তাই আমাদের শরীরে উপকার পাওয়ার জন্য প্রতিদিন এক গ্লাস করে দুধ পান করাটা আমাদের প্রয়োজন। আপনি চাইলে আপনার খাবার ডায়েট চেটে প্রতিদিন সকাল অথবা রাতে এক গ্লাস দুধ রাখতে পারেন। এতে করে আপনার অনেক উপকার মিলবে। সবাই সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন আসসালামু আলাইকুম।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url