সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন
সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করবো। যদিও কলা আমাদের সবার পছন্দের একটা ফল। ছোট থেকে বড় সব ধরনের মানুষ কলা খেতে খুব পছন্দ করে। বর্তমান সময়ে অন্যান্য ফলের থেকে কলা সবাই বেশি খেয়ে থাকে।
আমরা অনেকে কলা খেয়ে থাকলেও এর উপকারিতা ও নিয়ন সম্পর্কে জানি না। অতএব এই ফল সহজলভ্য যা খাওয়া সহজ, এবং এটি সবকিছুর সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়। তবে সকালে কলা খাওয়ার উপকারি ও নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।
ভূমিকা
সকালে কলা খাওয়ার বেশ কিছু উপকারী ও নিয়ম রয়েছে। কলা একটি পুষ্টিকর ফল যা সবাই খেতে খুব পছন্দ করে। এবং এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, পটাশিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন বি৬, এবং ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি সমূহ। এবং এই পুষ্টি উপাদানগুলি যা আমাদের শরীরের জন্য বিভিন্ন উপায়ে উপকারী। তাই সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন।
ভরা পেটে কলা খেলে কি হয়
যারা প্রচুর পরিমাণে পরিশ্রম করে থাকে তাদের জন্য কলা আদর্শ ফল। এবং কলা এমন একটি ফল যা আমাদের শরীরের সঙ্গে সঙ্গে এনার্জি তৈরি করতে পারে। যার ফলে দুর্বলতা কাটাতে কলার কোন বিকল্প নেই। এবং অনেক সময় দেখা যায় যারা বড় বড় খেলোয়ার তারা বিরতির সময় কলা খেয়ে থাকেন। তবে এর আসল রহস্য হচ্ছে এটি। আবার কখন কলা খাবেন বা কখন খাবেন না এটা জানা আমাদের অত্যন্ত জরুরী। কারণ না জানা থাকলে এটা প্রচুর এনাজিক এ ফলটিতে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, এবং অসুখ এর কারণ হতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক কখন কলা খাব আর কখন খাবো না।
কলাতে রয়েছে উচ্চ তাপমাত্রায় পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। যা আমাদের হার্ট ভালো রাখে, তার সাথে আলসার দূর করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে। এবং তাছাড়াও রক্তের হিমোগ্লোবিন উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য ওর মতো লজ্জাজনকে রোগগুলো সারিয়ে তুলতে সহায়তা করে। এবং শতকরা এই ২৫ ভাগ চিনি সমৃদ্ধ কলা গুলো যা আমাদের শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে।অতএব এসব উপকার তখনই পাওয়া যাবে যখন আপনি ভরা পেটে কলা খাবেন।
সকালে কলা খাওয়ার নিয়ম
আপনি যদি সকালবেলা কলা খান তাহলে সারাদিনের উপকারিতা পাওয়া যাবে। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন সকালে কলা খেলে, খালি পেটে কলা খাওয়া যাবে না। এবং খালি পেটে কলা খাওয়া কোনভাবে উচিত নয়। সকালে কলা খেলে আপনি অন্য কোন খাবারে সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন এবং অন্য নাস্তা খাওয়ার পর এটি খেতে পারেন। তাতে অনেক উপকার মিলবে।
পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা
অনেকে আছেন কলা খান না আবার অনেকেই আছে যে প্রতিদিন কলা ছাড়া চলে না। অবশ্যই অনেকে পাকা কলা খেয়ে থাকেন। আবার অতিরিক্ত পাকা কলা বেশিরভাগ মানুষ খেতে পছন্দ করেন না। অনেকে ভাবেন কলার রং কালো হওয়ার কারণে মনে হয় অতিরিক্ত পেকে যাওয়াই পচন ধরেছে তাই ময়লার সঙ্গে কলম ফেলে দেওয়া হয়।
অতএব কিছু গবেষকদের মতে জানা যায় যে পাকা কলা প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণে সম্পন্ন। আসলে কলা যখন অতিরিক্ত পেকে যায় তার পুষ্টি কোন পরিবর্তন হয়ে যায়। তার মানে এই না যে কলারটি পুষ্টিগুণ হারিয়ে ফেলে বরং এর পুষ্টিগুণ আরো দ্বিগুণ হয়ে যায়।
এবং কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আঁশ, কপার, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি সিক্স ও বায়োটিন ইত্যাদি। আসুন জেনে নেওয়া যাক পাকা কলার উপকারিতা সমূহ গুলো।
শক্তি বাড়েঃ শরীরে কোন ধরনের চর্চা করার পর যদি অতিরিক্ত পাকা কলা খাওয়া যায়। এবং দুই থেকে তিনটি কলা খেলে দেহে শক্তি বাড়ায়। এবং অতিরিক্ত তাকে কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট ও সুগার থাকে। যা শরীরে শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।
হতাশা দূর করেঃ বেশি পাকা কলা খাওয়ার ফলে হতাশা দূর করে থাকে এবং সতেজ ভাব নিয়ে আসে। এবং এতে বেশি পরিমাণে ট্রিপটো ফ্যান রয়েছে যা খাবারের পর সেরোটোনিনে পরিণত হয়ে থাকে। যার ফলে এই উপাদানগুলো নার্ভাস সিস্টেমকে ঠান্ডা রাখে।
বুক জ্বালা দূর করতে সাহায্য করেঃ অতএব বাদামি বা কালো দাগ এসব সহ বেশি পাকা কলা খেলে বুক জ্বালা কমাতে সহায়তা করে এমনকি অ্যান্টাসিড এর কাজ করে থাকে।
হৃদরোগ প্রতিরোধ করেঃ কলায় রয়েছে বেশি পরিমাণে পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম কম থাকায়,যা এটি খেলে কোলেস্টরেল মাত্রা ঠিক থাকে। এবং কলায় রয়েছে আঁশ যা হৃদরোগে ঝুঁকি কমায়। এবং কলায় রয়েছে কপার ও আয়রন, যার ওয়াক্ত ও হিমোগ্লোবিনের পরিমাণটা বাড়ায়।
নিয়মিত কলা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে ক্ষমতা মারাত্মক বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। সেই সঙ্গে হার্টের ক্ষমতা ও বাড়তে শুরু করে। কলা খাওয়ার মানেই হচ্ছে শরীরে পটাশিয়ামের এন্ট্রি হাওয়া। যার ফলে আমাদের দেহের অন্দরে পটাশিয়াম বাড়তে থাকলে স্বাভাবিকভাবে হার্টের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করে। অতএব এক কথায় বলতে পারেন যে এই খনিজটি ছোঁয়াতে হার্টের পুনর্জীবন ফিরে পায়।
রক্তচাপ কমায়ঃ অতিরিক্ত পাকা কলা খাওয়ার ফলে রক্তনালীতে থাকা ব্লক দূর করে এবং স্টক ও হার্ট অ্যাটাক থেকে প্রতিরোধ করে। এবং বেশি পাকা সোডিয়াম কম থাকে ও পটাশিয়াম বেশি থাকে।যার ফলে নিয়মিত পাকা কলা খেলে রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে।
দূর করে রক্তস্বল্পতাঃ অতিরিক্ত পাকা কলা রয়েছে আয়রনের পরিমাণটা বেশি যার কারণে এটি অ্যানামিয়া বা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে থাকে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ এবং অতিরিক্ত পাকা কলা খেলেও হজম ভালো হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
কোষের ক্ষতি রোগঃ পাকা কলা রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নইলে কোষ নষ্ট হওয়া থেকে রোধ করে এতে রোগ হওয়ার ঝুঁকি কম হয়। এবং তাছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার ফলে কলা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধঃ ক্যান্সারজনিত রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে থাকে পাকা কলা। যা বেশি পাকা কলা উপরে যে কালো দাগ পড়ে তার টিউমার ন্যাকরোসিস ফ্যাক্টর নামের উপাদান তৈরি করে যা আমাদের শরীরে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষ ধ্বংস করে থাকে।
রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা
রাতে বিছানায় যাওয়ার আগে কলা খাওয়ার যেসব উপকারিতা রয়েছে, নিচে দেওয়া হলো।
- যে কারণে রাতে ঘুমানোর আগে কলা খাওয়ার যেসব উপকারী বা অবনী বলেন। রাতে ভালো ঘুমের জন্য অনেকেই নানা রকমের প্রতিকার রয়েছে, যেমন ভেষজ চা পান থেকে শুরু করে আরামদায়ক সুর বেঁছে নেন।
- পাড়াতে রয়েছে ঘুম ভালো করার মত কিছু পুষ্টি উপাদান।যা কলার পুষ্টি উৎসব।
- এবং কলাতে রয়েছে পেশি আরামদায়ক রাখার ক্ষমতা।
নিয়মিত কলা খাওয়ার উপকারিতা
নিয়মিত কলা খাওয়ার ফলে ইমিউনিটি সিস্টেম অথবা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। কারন কলাতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। যার ফলে সাহায্য করে আমাদের শরীরের ফ্রি রেডিকেল কে কম করতে। যার ফলে আমাদের শরীরে কোষগুলো অক্সিডেটিভ স্টেস দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।
দুধ কলা খাওয়ার উপকারিতা
দুধ অথবা কলা খাওয়ার উপকারিতা অনেকেরই জানার আছে। তবে দুটোই একই সাথে যদি খাওয়া হয়, কিন্তু উপকারিতা ও লাভ দুটোই বেড়ে যায়। এবং এটিকে বলা হয় দুধ কলা ডায়েট। এবং ১৯৩৪ সালে ডাঃ জর্জ হারোপ এই দুধ কলা ডায়েট প্রোগ্রাম তৈরি করেছিলেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক দুধ কলার উপকারিতা।
ক্যালোরিঃ এবং এই খাবারটিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি আছে সাধারণত তিনটি কলা ও এক কাপ ফ্যাট মুক্ত দুধ খেতে হয়। অতএব কলা ও দুধ আপনি আগে ও পরে খাওয়া যায়। এটি আপনার ত্বক মিশ্রণ করবে। এবং এর পাশাপাশি প্রচুর পানি পান করতে হবে। যা আপনি দৈনিক ১০০০ এর মতো ক্যালোরি পাবেন।
এবং প্রতিটি কলায় শক্তি থাকে ১০০ ক্যালরি। এবং এক কাপ দুধে ৮০থেকে আরো বেশি ক্যালরি থাকে। যার ফলে দৈনিক তিনবার ৯০০ ক্যালোরি পাওয়া যায়। অতএব এই ক্যালোরিগুলো ওজন কমাতে সহায়তা করে।
ত্বক ও দাঁতের যত্নঃ অতএব দুধ কলা ডায়েটে ত্বক উজ্জ্বলা মিশ্রণ করে থাকে। ব্রণের চিহ্ন দাগ দূর করে। এবং দাঁত সাদা করতে এটি খুবই কার্যকারী। তবে এটি আপনার সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম হয়।
পুষ্টিতে ভরপুর কলাঃ কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি ও ই ইত্যাদি। এবং এতে রয়েছে খনিজ, পটাশিয়াম, জিংক আয়রন।যা আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।
ফ্যাট মুক্ত দুধের গুনঃ এবং এতে চর্বির মাত্রা খুবই কম বা থাকেই না। তাই এটি কোলেস্ট্রল মাত্রা কমাতে খুবই উত্তম। এবং ফ্যাট মুক্ত দুধে ফ্যাট বা চর্বি ছাড়া বাকি উপাদানগুলো ঠিক যথাযথ পরিমাণে থাকে। যার ফলে দুধের প্রোটিন মাংসপেশি মজবুত করতে সাহায্য করে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
আপনি যদি মনে করেন ওজন কমানোর জন্য শুধু এই কলা দুধ ডাইটের উপর নির্ভর শীল। তা মোটেও আপনার উচিত হবে না হবে না। তবে এটি শরীরের ক্যালরি যোগান কিছুটা কম হওয়ার কারণে দুর্বল লাগতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনি দিনে দুইবার খেতে পারেন।
তবে একবার অল্প কিছু স্বাভাবিক খাবার অথবা (ভাত অন্যান্য তরকারি) খেতে হবে। এবং যেসব মহিলাদের মাসিকের সময় এ প্রোগ্রাম করতে হবে এবং যার কারনে প্রোগ্রামে আয়রনের ঘাটতি আছে।
লেখকের মন্তব্য
উপর থেকে আমরা সকালে ভরা পেটে কলা খেলে এবং নিয়ম অনুযায়ী কলা খেলে কি হয় তার সম্পর্কে জানলাম। কলাতে একাধিক পরিমাণে উপকারিতা রয়েছে ও পুষ্টিকুণ রয়েছে। তাই আপনি চাইলে প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি পাকা কলা খেতে পারেন, যে আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। পাকা কলা খাওয়ার পরে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই প্রতিদিন পাগার বেলা খাওয়ার চেষ্টা করুন। এবং নিয়ম অনুযায়ী সকালে খালি পেটে না খেয়ে ভরা পেটে খান, দেখবেন অনেক উপকার মিলবে।সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url