কফি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
কফি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।কফি খেতে কেউ পছন্দ করেনা এরকম মানুষ পাওয়া খুব দুষ্কর। কারণ ছোট থেকে বড় সবাই কফি খেতে খুব পছন্দ করে এবং ভালোবাসে।কফি একটি জনপ্রিয় পানির মধ্যে অন্যতম।
এবং ক্লান্তিহীন শরীরে অতি দ্রুত শক্তি ফিরে আনতে এর কোন জুড়ে হয় না। তাই অনেকেই কফি খেয়ে থাকেন। আমরা কফি খেয়ে থাকলো কফি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানিনা যা আমাদের জানা অবশ্যই প্রয়োজন, আসুন জেনে নেওয়া যাক।
ভূমিকা
কফি এমন একটি জনপ্রিয় বিশ্বব্যাপী পানীয়ের মধ্যে অন্যতম।যা আমাদের ক্লান্ত শরীরকে অতিরিক্ত ভাবে শক্তি ফিরে আনতে সহায়তা করে।এবং ব্যস্ততার মাঝে আমাদের শরীরকে চাঙ্গা রাখতে অনেকেই কফি খেতে ভালোবাসেন।অনেকে কাজ করতে করতে ঘুম পেলে কফি পান করে থাকেন। কিন্তু আপনি কি জানেন যে নিয়মিত কফি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে কি পরিবর্তন ঘটে। এখান থেকে কফি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আসুন জেনে নেওয়া যাক।
সকালে ব্ল্যাক কফি খাওয়ার উপকারিতা
আপনি যদি সকালে এক কাপ কফি দিয়ে দিন শুরু করেন তাহলে বলা যায় যে, কফি প্রেমীদের এ পানীয়টি স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। এবং ব্ল্যাক কফি সাধারণত যায় এতে কোন ক্রিম দুধ এবং মিষ্টি জাতীয় নেই। অতএব আপনি ক্যালোরি চর্বি এবং চিনি যোগ না করেই এসব কফির সুবিধা পেয়ে যাবেন।
তবে আবার অনেকে রয়েছে যারা মনে করে ব্ল্যাক কফি খেলে ওজন কমে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই পানীয় ওজন কমানো সম্ভব কিনা।
গবেষণায় জান যে খাবারের আগে আপনি যদি সকালে কফি পান করেন তাহলে, আপনি নিম্ন লিখিত খাবারের যেসব ক্যালরি খান তা কমাতে পারে। অতএব আপনি যদি খাবারের আগে চার ঘন্টা পর্যন্ত কফি পান করে থাকেন,তাহলে কফিতে ক্লোরো জেনিক অ্যাসিড রয়েছে যা আমাদের চর্বি বান বাড়াতে দেখানো হয়েছে এবং কার্বোহাইড্রেটের শোষণকে এটি ধীর করতে সাহায্য করে থাকে।
এবং ক্লিনিকাল নিউট্রেশনে প্রকাশিত হয়েছে যে, অতএব গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতিদিন সকালে এক কাপ কফি পান করলে ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে। তবে মনে রাখতে হবে এক চা চামচ চিনি যোগ করলে হয়তোবা সেটি উপকারের থেকে অপকার হওয়া সম্ভব না রয়েছে।
রাতে কফি খাওয়ার উপকারিতা
এমনকি অনেকেরই রাতে খাবার পর এক কাপ কফি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। আসলে রাতে খাবার খাওয়ার পর চা অথবা কফি পান ক্ষতিকর বা উপকারী এ নিয়ে রয়েছে অনেক বিতর্ক।
পরিচালক ও চিকিৎসা উইল কোল অয়েলঅ্যান্ড গুড প্রতিবেদনে জানান যে, খাবার খাওয়ারের পর কফি পান করাটা ভালো না খারাপ সেটা বিষয়ের ওপর নির্ভর করে থাকে। তবে কে কতটা কফির পান করছে এবং কি ধরনের কফি পান করছে, তা জানা বেশ জরুরী।
উইল কোল বলে থাকেন যে উচ্চমানের যেসব কপি রয়েছে সেগুলো পুষ্টি সমৃদ্ধ পানীয়। যা এগুলোতে বেশি পরিমাণে ক্যাফেইন সরবরাহ করে থাকে। এবং এর পাশাপাশি পলি ফেনল, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। এবং এসব উপাদান গুলো দীর্ঘ স্থায়ী রোগ, যা এমনকি মৌসুমে এলার্জি থেকে সুরক্ষিত রাতে সহায়তা করে।
তবে উইল কোল জানান যে, কফি পান করার ফলে হজমের সহায়তা করতে পারে। এবং এটি হজমতন্ত্রের গতিশীলতা ও পিচ্ছিল ভাব উন্নত করে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। তবে এটি একজনকে একেক ভাবে প্রবাহিত করে থাকে।
চিনি ছাড়া কফি খাওয়ার উপকারিতা
চিনি ছাড়া কফি খাওয়ার ফলে আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়াও কালো কফিতে ক্যালোরি পরিমাণ টা খুবই কম। যার কারনে ওজন কমাতে এর জুড়ি নেই। এবং বিশেষজ্ঞ মতে জানা যায় যে কালো কফিতে রয়েছে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড, যা আমাদের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে তাড়াতাড়ি সাহায্য করে। তাছাড়া ও নতুন করে আমাদের শরীরে মেদ জমার কোন আশঙ্কাও কমায়।
কফি খাওয়ার উপকারিতা
আমরা অনেকেই কমবেশি কফি খেয়ে থাকি এবং পছন্দ করি, যারা কফি প্রেমীরা রয়েছেন, তাদের জন্য কফি বেশ উপকারী।আসুন জেনে নেওয়া যাক কফি খাওয়ার ফলে কি কি উপকারিতা। এবং ত্বক ও সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য আমাদের ব্লাক কফির কি কি উপকারিতা গুলো তার নিচে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।
ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ জনপ্রিয় এই ব্ল্যাক কফিতে রয়েছে ক্যালরি মুক্ত। এবং একটি স্থিতিশীল ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে। এবং এটি চিনি ছাড়া ব্লাক কফি সবচেয়ে বড় সুবিধা গুলো মধ্যে একটি হল বেটাবলিজম। এবং এটিকে উদ্দীপিত করে যার ফলে আমাদের শরীরে শক্তি তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। এবং এছাড়াও এতে রয়েছে ক্লোরজেনিক এসিড সমৃদ্ধ যা আমাদের গ্লুকোজ উৎপাদন কমিয়ে অতিরিক্ত ফ্যাট উৎপাদন করতে প্রতিরোধ করে থাকে।
সামগ্রিক শারীরিক ফিটনেস বাড়ায়ঃ এবং ক্যাফিন স্নায়ুতন্ত্রের একটি বড় উদ্দীপক যা এটি ব্ল্যাক কফির অন্যতম প্রধান সুবিধা জনক।এবং এটি রক্তের অ্যানড্রনালীনের মাত্রা কে প্রবাহিত করে থাকে, যা আমাদের শরীরকে তীব্র শারীরিক পরিশ্রম সহ্য করতে সহায়তা করে থাকে।
ডাইবেটিসের ঝুঁকি কমায়ঃ তবে এই উপকারটি কোন সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই, তবে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে ব্ল্যাক কফি যে সব ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিরোধ করা সহায়তা করে থাকে। এবং এটি বিশ্বাস করা হয় যে ক্যাফেন ইনসুলিন উৎপাদন কে উদ্দীপিত করে এবং এর রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা বজায় রাখা সহায়তা করে থাকে।
লিভার ফাংশন উন্নত করেঃ নিয়মিত এবং পরিমিত যেসব ক্যাফেন সেবন ক্ষতিকারক এবং লিভার এনজাইমের উৎপাদন হ্রাস করতে সাহায্য করে। যার ফলে এটি পরবর্তীতে ফ্যাটি লিভার অথবা লিভার ক্যান্সার এবং লিভার সিরোসিসে ঝুঁকিও কমায় থাকে।
ক্যান্সারের ঝুকি কমায়ঃ তবে এটি কোন সু প্রতিষ্ঠিত সত্য নয় যে, তবে কিছু গবেষণায় এই দাবিতে সমর্থন করে থাকে। এবং চিনি ছাড়া ব্লাক কফি পান করার ফলে দীর্ঘ মিয়াদের কোলন বা লিভারের ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। এবং বিশেষজ্ঞ এর মতে ক্যাফিনের অভ্যন্তরীণ প্রদাহ হ্রাস করার ক্ষমতা রয়েছে।
ত্বকের জন্য ব্ল্যাক কফির উপকারিতাঃ কখনো কখনো কিছু মহিলাদের ত্বকে ক্যান্সার ঝুঁকে থাকার কারণে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ কাপ ব্লাক কফি পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
ব্ল্যাক কফি খাওয়ার সঠিক সময়
ব্ল্যাক কফি পান করা সঠিক নিয়ম হলো,
সকালে খাবার খাওয়ার পর অথবা রাতের খাবারের ৩০ মিনিট বা একঘন্টা পর। যা কফি মেটাবলিজম বাড়ায় থাকে। যার ফলে হজম প্রতিক্রিয়া ভালো রাখে।
কফি খাওয়ার অপকারিতা
ব্ল্যাক কফি পান করার ফলে একাধিক উপকারিতা রয়েছে।তবে অতিরিক্ত পরিমাণে যে কোনো জিনিসটি খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। অতিরিক্ত ব্ল্যাক কফি পান করার ফলে নিম্নলিখিত কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো রয়েছে তা সম্পর্কে সচেতন হওয়া আমাদের খুবই প্রয়োজন।
তবে এটি সত্য যে ব্ল্যাক কফি আমাদের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে ব্ল্যাক কফি পান করলে তা উদ্বেগ বাড়িয়েও তুলতে পারে। কিন্তু এভাবে থাকলে আমাদের শরীরের জন্য ভালো থেকে ক্ষতিকারক হতে পারে।
অতএব ব্ল্যাক কফিতে উপস্থিত রয়েছে স্নায়ুতন্ত্রকে উদযাপিত করার জন্য পরিচিত। তাই শোয়ার ঠিক কিছুক্ষণ আগে ব্লাক কফি পান করলে ঘুমের চক্রকে ব্যাহিত করতে পারে।
এবং হাইপার এসিডিটি হলো ব্ল্যাক কফি যা পান করার। (এটি পানীয়তে ক্যাফিন এর উপস্থিতির কারণে) এটি আরেকটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া।
এবং এটি ভারসাম্যহীন ডায়েটে ডায়েটে,যেখানে ব্ল্যাক কফি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হলে তা আমাদের শরীরকে উন্নত প্রয়োজনীয় পুষ্টি শোষণ করতে বাধা দিতে পারে যার ফলে আমাদের শরীরে আরো ক্ষতি হতে পারে।
তাছাড়াও ব্লাক কপিতে একাধিক প্রচুর পরিমাণে উপকারিতা রয়েছে। যা প্রতিদিন এক কাপ কেলে এর উপকারিতা গুলো পাওয়া যাবে। তবে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকাটাই উচিত।
লেখকের মন্তব্য
আমরা উপর থেকে কফি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানলাম। কফি যেমন আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ থেকে প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। তেমনি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে এর ক্ষতিকর হতে পারে। অতএব অতিরিক্ত কোন জিনিসই ভালো না। কিন্তু কফি আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী।আপনি চাইলে আপনার ডায়েট চেটে প্রতিদিন একবার হলেও কফি রাখতে পারেন, এতে করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url