গোলাপ ফুল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

গোলাপ ফুল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হবেন, আমরা অনেকেই জানি না গোলাপ ফুল খাওয়া যায় কিনা। এবং এর কোন উপকারিতা রয়েছে কিনা। কারণ গোলাপ ফুল আমরা সবাই পছন্দ করে থাকলেও, এটি খাবার সম্পর্কে ধারণা অনেকেরই নাই।
গোলাপ ফুল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
গোলাপ সবার প্রিয় একটি ফুল, যা কোন ফুলের সাথে তুলনা হয় না। এ ফোটে কি আদো খাওয়া যায়, এরকম প্রশ্ন আপনাদের মনে আসতে পারে, বাট এটাই সত্যি গোলাপ ফুল খাওয়া যায় এবং এটার অনেক উপকারিতা রয়েছে তা আমরা অনেকেই জানিনা, আসুন জেনে নেওয়া যাক গোলাপ ফুল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। 

ভূমিকা

রোজ ডে আসলেই আমাদের গোলাপ ফুলের কথা মনে পড়ে যায়। অর্থাৎ ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে গোলাপকে মনে করা হয় ভালবাসার প্রতীক।গোলাপ ফুল খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায় তা আমরা অনেকেই জানিনা। শুধু মনের দিক নয় শরীরের দিক দিয়েও গোলাপ ফুল বেশ উপকারী। গোলাপ ফুলের রয়েছে যৌগ যা মেটাবলিজম বাড়ায়।যার ফলে আমাদের শরীরে ক্ষতিকারক পদার্থগুলো অকার্যকর হয়ে বাড়িয়ে আসে। যার ফলে ও ধীরে ধীরে ওজন নিয়ন্ত্রণে আসে। তাছাড়াও এ পানি ও সেন্স উন্নত করার ফলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার গুলো গ্রহণের আগ্রহ কমে যায়। এখান থেকে জেনে নেন গোলাপ ফুল খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত।

গোলাপ ফুল দিয়ে রূপচর্চা

গোলাপের পাপড়ি থেকে তৈরি করা হয় গোলাপজল, যা ত্বকে টোনার হিসেবে কাজ করে থাকে। যা বাইরে থেকে ঘরে ফিরে আসলে, এক টুকরো তুলোর সাথে গোলাপজল ভিজিয়ে, তা আপনার মুখে আলতো করে সম্পূর্ণ মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে। এবং ত্বকের জমা ময়লাগুলো, পাশাপাশি মেকআপ ভালো পরিষ্কার হয়ে থাকে।

গোলাপজলে পাপড়িতে রয়েছে প্রাকৃতিক তেল, যা ত্বকের ময়েস্চারাইজে কাজ করে ।যার ফলে ত্বক মিশ্রণ ও কমল হয়ে থাকে। এবং যাদের অনেক বেশি সংবেদনশীল, তাদের জন্য গোলাপের পাপড়িতে চিনি থাকাই এটি বেশ কার্যকরী।

গোলাপের পাপড়িতে রয়েছে অনেক বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি, সম্পূর্ণ। যার সূর্যের রশ্মি থেকে আমাদের ত্বকের রক্ষা করতে সাহায্য করে। এবং ত্বকের জন্য এই মিশ্রণটি বানাতে, শসা রসের সাথে গ্লিসারিন এবং গোলাপজল একই সঙ্গে মিশাতে হবে। ঘরের বাইরে যাওয়ার আগে এই মিশ্রণটি মুখে মেখে নিতে হবে।

ব্রণের দাগ ও সমস্যা দূর করতে গোলাপ ভূমিকা রাখে। এতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। যার ফলে এটি ব্রণ ওঠার প্রবণতা দূর করে থাকে। এবং ত্বকে মাঝেমধ্যে প্রদাহ দেয়, গোলাপের পাপড়ি দ্বারা এটি দূর করতে পারে।এবং তার পাশাপাশি ত্বকে লালচে ভাব একজিমা এবং সো সোরিয়াসিস দূর করে থাকে।

আমাদের চোখের নিচে কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে। এক তুলোর সঙ্গে গোলাপজল ভালোভাবে ভিজিয়ে নিয়ে আমাদের চোখের নিচে রাখতে হবে। কয়েক মিনিট ধরে রেখে দিতে হবে। এভাবে আপনি যদি টানা কয়েকদিন করলেই, ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।

চুলে গোড়ায় পুষ্টি যোগাতে ভালো কাজ করে থাকে।গোলাপের পাপড়ি শুধু ত্বকে নয় চুলের ক্ষেত্র ব্যাপক ভূমিকা রাখে। আমাদের চুলের গোড়ায় অনেক সময় প্রয়োজনীয় পুষ্টি পৌঁছাতে পারে না।কিন্তু এই পাপড়ি তৈরি প্যাকগুলো কেশব জায়গায় পুষ্টি পৌঁছাতে সক্ষম হয়। যার ফলে চুলের গোড়ায় রক্ত চলাচল সচল করে,তার পাশে বসে নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে।

গোলাপ ফুলের চা এর উপকারিতা

গোলাপ ফুলের চায়ের অনেক উপকারিতা রয়েছে তা নিচে দেওয়া হল।

গোলাপ ফুলের চা বানাতে যা যা লাগেঃ গোলাপ ফুলের গাছে পাপড়ি ঝরে পড়ে গেলে, আপনি সেগুলো ফেলে না দিয়ে চায়ের কাজে ব্যবহৃত করতে পারেন। এবং গোলাপের পাপড়ি শুকিয়ে তার সাথে আপনি বিভিন্ন ধরনের ভেষজ মিশিয়ে বিভিন্ন ধরনের চা তৈরি করতে পারেন। তবে এ চা বাড়ানোর জন্য গোলাপের পাপড়ি যথেষ্ট। একটি পাত্রে গরম পানি নিতে হবে। পানিতে গরম হয়ে আসলে, কিছু পরিমাণে শুকনো পাপড়ি ছড়িয়ে দিন। এরপর পাত্রটি ভালোভাবে ঢেকে দিন কয়েক মিনিট। তারপর পাপড়ি গুলো ভালোভাবে ছেঁকে নিয়ে গরম গরম চা পরিবেশন করুন, তা হবে গোলাপ ফুলের চা।

চায়ে যে সকল গুনঃ 

ব্যাথা নাশকঃ গোলাপে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার ফলে ব্যথা-নাশক হিসেবে ভালো কাজ করে থাকে। গবেষণা করে জানা যায় যে, যারা অতিরিক্ত ওজন কমাতে চান তাদের জন্য এ গোলাপ চা ওজন কমাতে সাহায্য করে।

ক্ষুধানিবারকঃ গোলাপ চা ক্যাফেন মুক্ত, যার কারনে কফি বা চায়ের বিকল্পে একটি খাওয়া যেতেই পারে। এবং এটা ক্ষুধা নিবারক হিসেবে কাজ করে থাকে যার ফলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে না। 

হজম শক্তি বর্ধকঃ আমাদের শরীরে হজম শক্তি বর্ধক হিসেবে কাজ করে থাকে গোলাপ। আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য পরিপাকতন্ত্র ঠিক মত কার্যকর রাখা অবশ্যই জরুরী। গোলাপ চা পাচকতন্ত্রের বেশ উপকারী, যা ব্যাকটেরিয়া তৈরিতে সাহায্য করে। এবং দীর্ঘদিন ধরেই এই গোলাপ চা কোষ্ঠকাঠিন্য ডায়রিয়ার সমস্যা হারবাল যে কোন ওষুধ হিসেবে কাজ করে থাকে।

বিষনাশকঃ এবং গোলাপ চা যাকে বলা হয় বিষনাশক। এটি মূত্রনালী সংক্রমণ প্রতিরোধ ছাড়াও আমাদের শরীরে বিভিন্ন বিষয়ক উপাদান দূর করতে এই গোলাপ চা সাহায্য করে থাকে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ গোলাপ চায়ে রয়েছে ভিটামিন সি। স্বাস্থ্য সম্মত ভাবে ওজন কমানোর আগে আমাদের শরীর থেকে বিভিন্ন রোগ দূর করা প্রয়োজন। আমাদের শরীরে সংক্রমণ দূর করার জন্য এই গোলাপের ভিটামিন সি খুবই কার্যকর।

গোলাপ ফুল খাওয়ার উপকারিতা

গোলাপ ফুল আমার ফুলের রানী হিসেবে পরিচিত। গোলাপ ফুল খাওয়ার উপকারিতা তা গুলো নিজে দেওয়া হল।

পিরিয়ডের সমস্যাঃ বিশেষজ্ঞরা জানান যে, গোলাপের পাপড়িতে রয়েছে প্রায় ৯৫% পানি। যার ফলে এতে ক্যালোরি পরিমাণটা খুবই কম রয়েছে। এবং গোলাপ ফুলের পাপড়িতে রয়েছে ভিটামিন সি। বদ হজমের সমস্যা হলে, সেটা দূর করার জন্য গোলাপের পাপড়ি প্রচলন চীনে।এবং পিরিয়ডের সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের জন্য গোলাপের পাপড়ি বেশ উপকারী।

ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যাঃ যাদের অতিরিক্ত ওজন রয়েছে তারা ওজন কমাতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে থাকেন। কি করলে ওজন কমবে তা বুঝে উঠতে পারে না। আপনিও যদি এই একই সমস্যায় ভুগেন ওজন কমানো নিয়ে, আস্থা রাখতে পারেন এই গোলাপ ফুলে ওপরে। প্রতিদিন যদি আপনি একটি করে তাজা গোলাপ ছিঁড়ে নিয়ে খেয়ে থাকেন, এতে করে অনেক উপকার মিলবে। যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। আবার অন্যদিকে আপনার রান্নার সাদ বাড়ানোর জন্য রোজ ওয়াটার মেশাতে পারেন।

স্ট্রেস থেকে মুক্তি পেতেঃ গোলাপের সৌরভে মন ভালো করে থাকে। যা আয়ুর্বেদ মতে এ সুগন্ধ ভালো কাজ করে অ্যারোমা থেরাপি হিসেবে। গোলাপ ফুল খাওয়ার ফলে আপনার ভিতর থেকে সতেজ করে তুলবে। অতএব আপনি যদি স্ট্রেস মানসিক চাপ অনুভব করে থাকেন, তবে গোলাপের গন্ধ আপনাকে, হালকা করে তুলবে।আপনি অন্যকে গোলাপ ফুল উপহার দেয়ার পাশাপাশি , আপনার ঘরেও রাখতে পারেন এতে সুফল পাবেন।

গোলাপ ফুল খাওয়ার নিয়ম

গোলাপ ফুল খাওয়া আর কিছু নিয়ম রয়েছে, যে আমরা অনেকেই জানিনা। এবং গোলাপ ফুল খাওয়ার নিয়ম গুলো অধিকাংশই, আদম প্রদান এবং সমাজের সাথে কিছু মিলে চলেছে। তুমি বলা যায় যে এইটা আদর্শ ভাবে ধৃতি এবং ধৈর্য ও সহ বৃদ্ধি করে। গোলাপ ফুল খাওয়ার ফলে এটা তাৎক্ষণিক অভিজ্ঞান এবং মৌন বা মেধার প্রকাশ করে থাকে।

গোলাপ ফুল দিয়ে চুলের যত্ন

গোলাপ ফুল দিয়ে চুলের যত্ন বেস উপকারী। আসুন জেনে নেওয়া যাক গোলাপ ফুল দিয়ে চুলের যত্নে কিভাবে নিবেন তা নিচে দেওয়া হলো।

চুল এবং মাথার ত্বক উভয়ের জন্য উপকারীঃ গোলাপ ফুলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পাশাপাশি আন্টি ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। খোলা অথবা গোলাপের জল চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। অ্যাস্ট্রিনজেন্ট বৈশিষ্ট্য যুক্ত গোলাপ, মাথার ত্বকের অতিরিক্ত তেল উৎপাদন রোধ করতে করে থাকে।এছাড়াও মাথার ত্বকে যেকোনো সমস্যা দূর করে থাকে গোলাপ, এবং চুলকে মজবুত করতে পারে।

গোলাপের পাপড়ি চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করেঃ গোলাপে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৩, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ইত্যাদি সহ। গোলাপে থাকায় অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য। যা আমাদের মাথার ত্বকের একজিমা এবং সোরিয়াসিস দূর করতে সাহায্য করে থাকে।গোলাপ ফুল থেকে যেসব তৈরি হয়, গোলাপ জল, তেল যা উৎপাদন কমিয়ে দেয়। যার ফলে শুষ্কতা দূর করে, খোকসি গঠন রোধ করে থাকে এবং চুলকে মজবুত করতে সাহায্য করে থাকে।

চুল পড়া রোধ করেঃ খুকশি কারণে আমাদের চুল পড়ার অনেক সমস্যা দেখা দেয়। এটি চুলের বৃদ্ধিকে প্রবাহিত করে থাকে। গোলাপে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য, যার ফলে স্বাস্থ্যকর মাথার টক তৈরি করে থাকে এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।

গোলাপ ফুলের অপকারিতা

গোলাপ ফুলের উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই রয়েছে যা আমরা গোলাপ ফুলের অপকারিতা সম্পর্কে জানলেও অনেকে অপকারিতা সম্পর্কে জানিনা। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক গোলাপ ফুলের উপকারিতা সমূহ

এলার্জিঃ গোলাপ ফুলের পরাগ ও সুগন্ধর কারণে কিছু মানুষের এলার্জি হওয়া সম্ভব না থাকে। এলার্জি লক্ষণ গুলোর মধ্যে রয়েছে চোখ ও নাক চুলকানি, হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও ত্বকে ফুসকুড়ি ইত্যাদি।

ত্বকের সমস্যাঃ গোলাপ ফুলের তেল ও নির্যাস আমাদের ত্বকের জন্য কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক হয়ে থাকে। যার ফলে আমাদের ত্বকে এলার্জি, চুলকানি, ফুসকুড়ি ও জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে।

চোখের সমস্যাঃ গোলাপ ফুলের পাপড়ি অথবা তেল, চোখের ভিতরে গেলে তা চোখ জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে। তাছাড়াও গোলাপ ফুলের সুগন্ধ বিভিন্ন ভাবে সমস্যা দেখা দেয়। এবং চোখের জ্বালা ও পানি হওয়ার কারণ হতে পারে।

লেখকের মন্তব্য

গোলাপ ফুল সবার কাছে খুব প্রিয় ও পছন্দের একটি ফুল।গোলাপ ফুল আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। শুধু শরীরের জন্য না রূপচর্চা এবং আমাদের মাথার ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। আপনি চাইলে এটি বিভিন্নভাবে খেতে পারেন। এবং যারা ওজন নিয়ে বেশি চিন্তিত তারা এ গোলাপ ফুল খাওয়ার ফলে অতিরিক্ত ওজন কমাতে পারবেন। গোলাপ ফুল ত্বকের জন্য বেশ কার্যকরী।

তাই আমরা গোলাপ ফুল দিয়ে ত্বক যত্ন নেই তাহলে আমাদের ত্বক অনেক উজ্জ্বল ও লাবণ্যময় হবে। আমার মতে যদি আপনারা এই নিয়ম অনুযায়ী গোলাপ ফুল ব্যবহার করেন তাহলে অনেক উপকার পাবেন। আশা করি ভালো লেগেছে ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url