টক দই এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
টক দই এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করব।আমরা অনেকেই দই বা টক দই খেতে খুব ভালোবাসি। বিশেষ করে শিশুরা ও একটু ভারী বয়সের মানুষ এ টক দই খেতে খুব বেশি পছন্দ করে। টক দইয়ে ভরপুর পুষ্টি ও উপাদান রয়েছে। যে আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী না,আমাদের ত্বকের জন্য টক দই অনেক উপকারী।
টক দই নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক অনেক উজ্জ্বল লাবণ্যময় হয়। এবং আমরা অনেকেই টক দই খেয়ে থাকি, কিন্তু টক এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা, আসুন আমরা এখান থেকে টক দইয়ের উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে জানব।
ভূমিকা
স্বাস্থ্যসম্মত খাবার হিসেবে টক দই অনেক উপযোগী, এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে পারলে শরীর ও মন দুটোর জন্যই অনেক উপকারী। সে ক্ষেত্রে টক দই একটি মুখ্য রুচি খাবার। একটি মজার বিষয় হলো,টক দইকে আমরা বিভিন্নভাবে খেতে পারি, এটি একটি মজাদার খাবার। যে কোন ফলের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায় আবার স্মুদি করেও খাওয়া যায়।আপনি যেভাবেই খান না কেন, খেতে অনেক সুস্বাদু ও মজা লাগে। টক দই রয়েছে অনেক ভিটামিন, যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার। আপনি সকালে যে কোন নাস্তার সাথে, খেতে পারবেন।এবং টক দই অনেক উপকার তা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
টক দইয়ের যত গুন
টক দইয়ের অনেক গুন রয়েছে। যা আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য অনেক কার্যকর। স্বাস্থ্যসম্মত ও একটি খাবার। আসুন জেনে নেওয়া যাক টক দইয়ের গুন সম্পর্কে জানবো।
ভিটামিন উপাদানঃ টক দইয়ে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন বি,পটাশিয়াম ইত্যাদি ম্যাগনেসিয়াম এর মত আরো অনেক কার্যকরী উপাদান রয়েছে। যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী এবং স্বাস্থ্যর ভালো রাখতে তার কোন বিকল্প নেই।
প্রোবায়োটিকে ভরপুরঃ টক দই হজম প্রক্রিয়া এর অন্ত্রের জন্য স্বাস্থ্য বজায় রাখতে প্রোবায়োটিক খুবই কার্যকরী। টক দই থেকে, বৃষ্টি বর্ষার সময় পেট ফোলা থেকে অথবা ডায়রিয়া সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণঃ টক দই ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে অনেকটা সাহায্য করে, এতে আর কোন বিকল্প নেই। এবং টক দই এ প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। যার ফলে অনেকক্ষণ খিদা লাগেনা। যারা অতিরিক্ত খায় তাদের সেই ইচ্ছাটা কমে যাই। যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে খুব সহজে কাজ করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়েঃ টক দই, রোগ জীবাণু সৃষ্টিকারি বিরুদ্ধে লড়াই করতে অনেকটি সাহায্য করে।এবং টক দইয়ের রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, জিস্ক এবং সেলেনিয়ামের কারণে যার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়।
হাড়ের গঠনঃ হাড় মজবুত করার জন্য টক দই খুব কার্যকর। এবং এক কাপ দই ২৭৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম রয়েছে। প্রতিদিন সকালে নাস্তার সাথে যদি এক কাপ টক দই খাওয়া যায় তাহলে খুব উপকারী।
এক দই এর উপকারিতা
তবে আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আসন টক দইয়ের কিছু উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।
- পেটের যেকোনো সমস্যা থেকে টক দই খাবার ফলে অনেক উপকার মিলে। টক দেওয়া রয়েছে ব্যাকটেরিয়া যা বদ হজম,কোষ্ঠকাঠিন্য ও অ্যাসিডিটি সমস্যা গুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এবং তাছাড়াও টক দই আমাদের পেটে আলসার হওয়া থেকে ঝুঁকি কমায়,এবং এটি বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গেছে।
- টক দই আমাদের শরীরে টক্সিন ও বিষ জাতীয় জন্তু থেকে বাধা দিয়ে থাকে।যার কারনে অকাল বার্ধক্য থেকে রোধ করে। তাই আপনি নিজেকে ফিট ও সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য নিয়মিত টক দই খেতে পারেন।
- এবং টক দই আমাদের শরীরে রক্তে শেতকণিকার সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়, বলে গবেষণা জানা যায়। এবং শেতকণিকা রোগ প্রতিরোধ হতে সৈনিকের কাজ করে থাকে। যার ফলে আপনি নিয়মিত টক দই খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
- টক দই আমাদের ওজন কমাতে অনেকটা সাহায্য করে। টক দই খাওয়ার ফলে পেট অনেক ভরা থাকে।যা অতিরিক্ত খাওয়া থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এবং যাদের বাড়তি ওজন তাদের খাবার তালিকায় নিয়ম মত টক দই রাখতে পারেন।
- এবং যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাদের জন্য এই টক দই অনেক উপকারী ও কার্যকর। যা দই এর প্রোবায়োটি উপাদান সমূহ ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল কমিয়ে দিয়ে হার্ট কে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- এবং আমাদের চর্মরোগ ও প্রতিরোধে খুব দ্রুত কাজ করে থাকে এ টক দই। এবং দইয়ে রয়েছে প্রাকৃতিকভাবে ল্যাকটিক অ্যাসিড। যা আমাদের ত্বকের মৃত কোষ কে দূর করে। যার ফলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- এবং টক দই মানসিক চাপ কমানো থেকে অনেক কাজ করে। যাদের এই সমস্যা তারা টক দই খাওয়ার চেষ্টা করুন। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, টক দই এমন যা উপাদান রয়েছে যা বিষন্নতা দূর করে।যার ফলে মেজাজ ভালো রাখতে সাহায্য করে।
টক দইয়ের অপকারিতা
টক দইয়ের অনেক উপকারিতা রয়েছে, যা আমাদের অনেকেরই অজানা। আসুন টক দই খাওয়ার ফলে কি কি উপকারিতা রয়েছে তার সম্পর্কে জেনে নিন।
- টক দইয়ের প্রভাবই হচ্ছে ঠান্ডা করা,এবং এটি খাওয়ার ফলে আপনাকে বিভিন্ন রোগ কাশি বা সর্দি সম্মুখীন দেখা দিতে পারে।
- এবং আয়ুর্বেদিক অনুযায়ে, কাশির জন্য দই দোষ বাড়াই। যার ফলে আপনার হাঁপানি, সাইনাস, কঞ্জেকশন, বা সর্দি যাদের কাশি ও শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা রয়েছে, যেসব মানুষদের জন্য অসুবিধার কারণ হতে পারে।
- তাছাড়াও টক দই শরীরে বিভিন্ন প্রদাহ ও সৃষ্টি করতে পারে।
টক দই কখন খাওয়া ভালো
অনেকে দুপুরে খাবার খাওয়ার পরে টক দই খেতে পারেন। এবং পুষ্টি বিদরা জানায় যে, দিনের বেলা টক দই খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার হয়। যে কোন খাবার খাবার পরে খেতে পারেন টক দই। এবং সব থেকে ভালো হয় যদি আপনি দিনে দুটি খাবারের পরপর এই দই খেতে পারেন।
টক দই কেন খাবেন?
টক দইয়ে মধ্যে আছে, প্রোবায়োটিক উপাদান,এবং উপকারী ব্যাকটেরিয়া। যার ফলে শরীরের বিভিন্ন ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া গুলোকে মেরে ফেলে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
এছাড়াও টক দিয়ে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ৬, বি ফ্যাট, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি সহ নানা ও পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে এ ভরপুর টক দই। আরো এতে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে ল্যাকটিক,অ্যাসিড যা যা পোস্টে শোষণের যোগাতে সাহায্য করে। এবং পুষ্টিবিদ্যা জানাচ্ছেন যে, দিনের বেলা টক দই খাওয়া সব থেকে উত্তম এবং ভালো কার্যকরী। এবং খাবার খাওয়ার পরে খেতে পারেন টক দই।
টক দই দিয়ে রূপচর্চা
টক দই আমাদের ত্বকের জন্য খুব উপকারী। টক দই দিয়ে অনেক রূপচর্চা করা যায়।
এবং যাদের ত্বক সূক্ষ্ম, তারা মধু নিবেন ৩/৪ চামচ টক দই ১/২ চামচ কাঁচা হলুদ, ১চামচ বেসন সবগুলো একত্রে মিশ্রণ করে মাস্ক বানিয়ে ত্বকে লাগান। এতে করে ত্বক অনেকটা উজ্জ্বল ফর্সা হবে। এবং স্ট্রবেরি ফল ২/৩ টা তার সাথে টক দই ব্লেন্ড করে, মাস্ক বানিয়ে ত্বকে লাগান।
দেখবেন আপনার ত্বক অনেক ফ্রেশ হবে, এবং ত্বকের কোলাজেন এর সমতা রাখবে। এবং ব্রণ তবে দাগ দূর করতে সাহায্য করবে ও বলিরেখা কমাবে ইত্যাদি।
লেখকের মন্তব্য
উপর থেকে যা যা জানলাম টক দই এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে দুটোই জানলাম।টক দই আমাদের শরীরের জন্য উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারও রয়েছে।তাই খাওয়ার আগে অবশ্যই, বুজে খেতে হবে। এবং টক দই আমাদের শরীরের জন্য না, আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী, তাই আপনি যদি টক দই নিয়মিত ব্যবহার করেন আপনার ত্বক অনেক উজ্জ্বল ও লাবণ্যময় হবে।
আমার মতে আপনি টক দই নিয়মিত ব্যবহার করলে ভালো উপকৃত হবেন। এবং তার সাথে চোখের নিজের ডার্ক সার্কেল গুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই নিয়ম অনুযায়ী আমরা টক দই ব্যবহার করব। আশাকরি আপনাদের এই আর্টিকেলটি অনেক ভালো লেগেছে। অনেক কিছু জানতে পেরেছেন,এবং ভালো লাগলো কমেন্ট করে জানাই দিবেন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url