পেট ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে নিন
আমরা অনেকেই বাইরে খাবার একটু বেশি পছন্দ করি, খেয়ে থাকে। সতর্ক থাকার সত্বেও বাইরে খাবারের প্রতি একটু বেশি লোভ হয়ে থাকে, বাইরের ভাজাপোড়া যে কোন জিনিস দেখে লোভ না সামলাতে পেরে আমরা খেয়ে ফেলি। এবং এ থেকে সৃষ্টি হয় পেটের ব্যথা। অতিরিক্ত তেলের ভাজাপোড়া জিনিস খেলে গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয় যার ফলে পেট ব্যথা করতে পারে।
এবং বর্তমান সময়ে এই সমস্যাটা বেড়ে চলেছে।কমবেশি সবারে পেট ব্যাথা সমস্যা হয়ে থাকে। বাইরে যেকোনো খাবার জিনিস পরিহার করতে হবে। যার ফলে কিছুটা হলেও পেট ব্যথার সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।এবং এখান থেকে পেট ব্যথার ঘরোয়া উপা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।
ভূমিকা
পেট ব্যথা এই বর্তমান সময়ে সমস্যাটা সবারই এখন বেড়ে চলেছে। সবার এই প্রবলেমটা দেখা দেয়, এবং অনেকেই চিন্তিত হয়ে যায় পেট ব্যাথা হলে কি করবে, আসলে পেট ব্যথা অনেক কারণে হয়ে থাকে যেমন গ্যাস, অ্যাসিডিটি এবং বদহজম সমস্যা থেকে পেটব্যথা হতে পারে, অথবা ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া জনিত ইনফেকশনের কারণেও হতে পারে।গ্যাস ও অ্যাসিডিটির সমস্যা গুলো সহজে দূর করা সম্ভব। কিন্তু ভাইরাস ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশন এই সমস্যাগুলো সহজে দূর করা যায় না।তাই আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।এবং পেট ব্যথা আর কিছু ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
ব্যাথা হলে কি দোয়া পড়তে হয়?
আমাদের ইসলামি ভাবে, পেট ব্যথা হলে কি দোয়া পড়বে এমনটি বলে গেছেন। আসুন জেনে নেই কি দুয়া পড়লে পেটব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
এ দোয়াটি পড়ো
أعوذُ باللهِ و قُدرتِه من شرِّ ما أَجِدُ و أُحاذِرُ
উচ্চারণঃ আউজু বিইজ্জাতিল্লাহি ওয়া কুদরতিহি মিন শারমি মা আজিদু ওয়া উহাজিরু।
অর্থঃআল্লাহর মর্যাদা ও তার কুদরতের উসিলায় আমি যা অনুভব ও ভোগ করছি, তা থেকে মুক্তি চাচ্ছি।
পেট ব্যাথা ঘরোয়া উপায়
পেট ব্যথা এই সমস্যা বর্তমান সময়ে বেশি বেড়ে চলেছে তাই আমাদেরকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে ।এখন জেনে নেই কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে পেট ব্যথা সমস্যা দূর করতে পারেন।
আদা চাঃ এবং যাদের পেট ব্যথার ও বমি বমি ভাব রয়ছে তারা আদা চা করে খেতে পারেন। যার ফলে আমাদের শরীর থেকে সব ধরনের প্রদাহ দূর হয়ে যায়। আপনি আদা যে কোন ভাবে খেতে পারেন যেমন চায়ের মাধ্যমে, কিংবা কাঁচা আদা হিসাবেও খেতে পারেন।
ক্যামোমিল চাঃ পেট ব্যথা থেকে শুরু করে বমি বমি ভাব ও বদ হজম, এবং ডায়রিয়া সহ এসব ওষুধ হিসেবে কাজ করে থাকে ক্যামোমিল। এবং এর ভেষজের গুণ নিয়ে বেশি গবেষণা না হলেও এর উপকারিতা ও গুণ অনেকেরই জানা রয়েছে। তাই আপনি পেট ব্যথায় ক্যামোমিল চায়ের ওপর ভরসা রেখে এটি খেতে পারেন।
পিপারমেন্ট চাঃ পেট ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে পিপারমেন্ট চা খুব ভালো কাজ করে থাকে। এবং যাদের পেটে ব্যথা, ইরিটেবল বাওয়েল৷ স্যা সিন্ড্রোম, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়ার সহ বদহজমের যেকোনো সমস্যা আছে, তারা চাইলে এ পিপারমেন্ট চা খেতে পারেন। যা আপনার অনেক উপকার মিলবে।
লেবু চাঃ লেবু চা পেট ব্যথার খুব ভালো উপকারী এবং দারুণ কাজ করে থাকে। এতে করে সমস্যাটা অনেক কমে যাতে পারে।তাই আপনি অতি কষ্ট ছাড়াই লেবু চা বানিয়ে ফেলুন। এবং লেবু চায়ের সঙ্গে সামান্য পরিমাণে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
লেবু ও পুদিনা রসঃ লেবুর রসের সাথে, পুদিনার রস মিশাতে পারেন। এবং তার সাথে অল্প পরিমাণে আদার রস অথবা লবণ মেশিয়ে নিন।এবং এই মিশ্রণ খাওয়ার ফলে আপনার পেটের অনেকটা সমস্যার সমাধান হবে এবং পেট ব্যথা কমে যাবে।
দইঃ পেটে ব্যাকটেরিয়া ভারসাম্য সমস্যার কারণ হলে, পেট ব্যথা এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। এবং যার ফলে দইয়ের মধ্যে প্রোবায়োটিক থাকায় এ খাবারগুলো পেটের ভারসাম্য বজায় রেখে ব্যথা অনেকটা উপশম করতে পারে।
কাঁচা কলাঃ এবং কাঁচা কলা টোটকা আমাদের অনেকেরই কাছে পরিচিত। এবং একটু পেট ব্যাথা হলে কাঁচা কলা রান্না করে খাওয়ার অভ্যাসটা আমাদের সবারই রয়েছে। এবং কাঁচা কলার সিদ্ধ খেলে, পেটের অনেকটা ব্যথা ও পেটের প্রদাহ সহ অনেকটা কমিয়ে দেয়। এবং এতে রয়েছে ভিটামিন বি৬,ফলেট ও পটাশিয়াম। যার ফলে এর মিনারেল শরীরের কোন পেশীতে যদি টান লাগে অথবা ব্যথা হলে এটি কমাতে বেশ সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত পানি পানঃ যাদের পেট ব্যথা সমস্যা রয়েছে তারা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। যার ফলে বেশি বেশি পানি পান করলে শরীর থেকে অনেকটা টক্সিন বের হয়ে যায়।
হাঁটাহাঁটি করাঃ নিজের প্রতি অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে, আপনার নিয়মিত পেট ব্যথা হলে আপনাকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। এবং এক্ষেত্রে আপনি পেটে স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করতে পারেন।
আজওয়ানঃ পেটের সমস্যা জনিত হলে, সমাধানে আজওয়ান খেতে পারেন। এতে করে আপনার ব্যথাটা অনেক কমে যাবে।
হঠাৎ তীব্র পেট ব্যথা যে কারণে হয়
হঠাৎ করে পেটের কোন অংশে যদি তীব্র ব্যথা বা গরু তো সমস্যা দেখা যায়, এটার চিকিৎসা না নিলে, খারাপ অবস্থায় চলে যেতে পারে।
পেজে তীব্র ব্যথা যে কারণে হতে পারে তা নিচে দেওয়া হলোঃ
অ্যাপেন্ডিসাইটিসঃ বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে, অ্যাপেন্ডিসাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার ফলে, হঠাৎ করে পেটের তীব্র ব্যথা দেখা দেয়। সাধারণত এটি ডান পাশে, পেটের নিচ করে প্রচন্ড ব্যথা হয়ে থাকে। এবং যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যান্ড ভার্জিনিয়া স্কুলের সহযোগী, অধ্যাপক প্যান্ট্রিসিয়া এল রেমন্ড বলেন যে, পা ভাঁজ করার ফলে ব্যথা অনুভব হয়, কারণ অ্যাপেনডিক্স থাকায় পেশিতে টান পড়ে থাকে। এবং এ ধরনের কোন সমস্যা বা ব্যথা হলে, অতি দ্রুত ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
গ্যাসস্ট্রাইটিসঃ এবং গ্যাসট্রাইটিসের কারণে তীব্র পেট ব্যথা হয়ে থাকে। এবং এর সাথে বমি বমি ভাব ও বমিও হতে পারে। এটি চিকিৎসা করা না হলে, বড় ধরনের গ্যাস্ট্রিক আলসার ও রক্তপাত হওয়া সম্ভাবনা থাকে। এবং অ্যালকোহল পান, ধূমপান, ইত্যাদি ব্যাকটেরিয়া সহ নানা কারণে, গ্যাসস্ট্রাইটিস হতে পারে।
কিডনিতে পাথরঃ নিতে হওয়া পাথর, যদি মূত্রনালীতে, প্রবেশ করে থাকে তাহলে খুব বেশি পেট ব্যথা হতে পারে।সাধারণত ভাবে এই ব্যথা পিঠের নিচে বেশি দেখা দেয়।আস্তে আস্তে এটি তলপেটের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এবং কিডনিতে পাথর হওয়ার ফলে, যে লক্ষণ গুলো দেখা দেয়, মুত্রের সঙ্গে রক্ত পড়া, জ্বর জ্বর ভাব,ও প্রসাবে জ্বালাপোড়া , প্রসাবে দুর্গন্ধযুক্ত ইত্যাদি
পেট ব্যথার ট্যাবলেট এর নাম
সর্ব প্রথমে আপনার কি ধরনের পেটে ব্যথা সেটা সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ হচ্ছে পেট ব্যথা ধরন অনুযায়ী আমাদের ওষুধ সেবন করতে হয়। আবার অনেক সময় অল্প পেট ব্যথা থেকে বেশি পেট ব্যথা মাত্রা বেড়ে যায়। সাধারণত পেট ব্যথা হলে ঘরোয়া ভাবে কিছু চিকিৎসা নিলে ভালো হয়ে যায়, কিন্তু অতিরিক্ত পেটব্যথা হলে, দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এবং ছোটখাটো যদি গ্যাসের সমস্যা অথবা তলপেটে ব্যথা হয়, তাহলে নিচের এ ওষুধগুলো খেতে পারেন,যা আপনার পেট ব্যথা ভালো হয়ে যাবে। পেট ব্যথা ভালো করার ট্যাবলেটের নাম সমূহ দেওয়া হলো।
- Norvis Tablet
- Algin Tablet
- Losectil Tablet
- Rekool Tablet
- Rebeloc Tablet
তলপেট ব্যথা হওয়ার কারণ
- মেয়েদের প্রস্রাবে সংক্রমণ অতি খুবই কম হয়ে থাকে। যার ফলে তলপেটে ব্যথা হতে পারে। এবং এর পাশাপাশি প্রসবের জ্বালা ও প্রসবের সময় ব্যাথা হতে পারে, এবং জ্বর জ্বর ভাব থাকতে পারে।
- এবং জরায়ু এর আশপাশে এ সংক্রমণ দেখা দিলে তাকে পেলভিক ইনফ্লামটরি ডিজিজ বলে। এবং যার ফলে তলপেটে ব্যথা জ্বর, প্রসাব নির্গত হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যেতে পারে। এবং অনেক সময় এ সংক্রমণ গুলো দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে।
- এবং অ্যাপেন্ডিসাইটির ব্যথা শুরু হয়ে থাকে নাভির চারো সাইট থেকে। এবং আস্তে আস্তে স্থায়ী হয় তলপেটের ডান দিকে। এবং তার সাথে বমিও হতে পারে।
- এবং অনেক সময় ভ্রণ জরায়ুতে স্থাপিত না হওয়ার ফলে ডিম্বনালিতে স্থগিত হয়ে থাকে এবং যার ফলে ডিম্বনালি ফেটে যায়। এবং এটি একটি জরুরি অবস্থা,পেটে প্রচন্ড ব্যথা হওয়ার পাশাপাশি পুরো তলপেটে রক্তক্ষরণ হওয়ার কারণে রক্তচাপ অনেকটা কমে যেতে পারে। আবার কোন কারণে ডিম্বাশয়ে রক্তপাত হলে বা সিস্ট বেঁকে গেলে এই ধরনের ব্যথা হয়ে থাকে।
লেখক এর মন্তব্য
আমাদের নানা সমস্যার কারণে পেট ব্যাথা দেখা দিতে পারে, এবং অল্প সময়ে আপনি যদি ঘরোয়া ভাবে এ পেট ব্যথার সারতে চান তাহলে উপরের টিপস গুলো দেখে ঘরোয়া ভাবে ব্যথা কমাতে পারেন। এবং যদি অতিরিক্ত কোন পেট ব্যথা হয়ে থাকে। তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। আমরা বাইরের কোন কিছু খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই, সতর্ক সচেতন হব। যাতে করে আমাদের পেটে কোন ধরনের সমস্যা না হয়।
পেট ব্যথা একটু কমন রোগ হলেও, আমাদেরকে সচেতন হওয়া খুবই প্রয়োজন। কারণ শুধু গ্যাস জনিত পেট ব্যথা হয়ে থাকে না ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া ফলে পেটব্যথা হয় যা আমাদের শরীরের জন্য খুব ক্ষতিকর। অবশ্যই নিজের প্রতি খেয়াল ও যত্নশীল হতে হবে। আশা করি আমার এই আর্টিকেলটা আপনাদের ভালো লেগেছে ভালো লাগলে কমেন্ট করে জানাবেন।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন, ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url