আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত জানব। আনারস একটি রসালো ও তৃপ্তি কর ফল। এবং খেতে অনেক সুস্বাদু। আনারস খেতে কমবেশি সবাই ভালোবাসে। আনারস আমাদের মানব দেহের জন্য খুব উপকারী। যা বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ থেকে রক্ষা করে।
আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
আমরা অনেকেই আনারস খেয়ে থাকি,এবং পছন্দ করে। কিন্তু আনারস খাওয়ার ফলে কি কি উপকারিতা রয়েছে ও অপকারিতা রয়েছে তা আমরা অনেকেই জানিনা, যা আমাদের জানা অবশ্যই দরকার। আসুন আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক ।

ভূমিকা

আনারস একটি রসালো ফল, খেতে অনেক সুস্বাদু যা সবাই পছন্দ করে থাকে। আনারস আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আনারসের প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন এ, সি ক্যালসিয়াম, ফসফরাস,এবং পটাশিয়াম সহ ইত্যাদি। এ ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে আঁশযুক্ত ক্যালোরি রয়েছে। এবং এটি কলস্টেরল ও চর্বিযুক্ত। তাই আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষায় এ ফলের কোন বিকল্প নেই। আসুন জেনে নেওয়া যাক আনারসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

খালি পেটে আনারস খাওয়ার উপকারিতা 

খালি পেটে খাওয়ার ফলে যে সব উপকারিতা পাবেন তা নিচে দেওয়া হলো।
  • পুষ্টির  অভাব দূর করে থাকে এবং আনারস পুষ্টির বেশ ভালো উপকারী। 
  • হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, এবং আনারস আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে বেশ কার্যকরী। এবং আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাংগানিজ,যা হারকে সুস্থ রাখে । 
  • আনারসে ওজন কমাতে সাহায্য করে। 
  • আনারসে চোখের স্বাস্থ্য ও রক্ষায় ভালো ভূমিকা রাখে। 
  • আনারস দাঁত ও মাড়ি সুরক্ষা রাখতে ভালো কাজ করে। 

আনারসের উপকারিতা সমূহ

আনারস আমাদের মানব দেহের জন্য খুবই উপকারী যা, এবং এতে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাশিয়াম ইত্যাদি রয়েছে। আনারসের কিছু উপকারিতা তা নিচে দেওয়া হলোঃ

পুষ্টির অভাব পূরণেঃ আনারস পুষ্টিতে ভরপুর এই ফল। এবং আনারসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে। এবং এগুলো অপরিহার্য উপাদান যা আমাদের দেহের পুষ্টির ঘাটতি অভাব পূরণে গুরুত্বপূর্ণ রাখতে ভালো ভূমিকা পালন করে থাকে।

হজম শক্তিকে উন্নত করতেঃ আনারস খাওয়ার ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে তার কোন জুরি নেই। আনারসে রয়েছে ব্রোমেলিন নামক এনজাইম। যা হজম শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে থাকে। এবং বদহজম ও হজম জনিত যে কোনো সমস্যা থেকে আনারস খাওয়ার ফলে মুক্তি পাওয়া যাতে পারে।

ভাইরাসজনিত ঠান্ডা ও কাশি প্রতিরোধেঃ বেনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা ভাইরাসজনিত ঠান্ডা ও কাশি প্রতিরোধ করতে বেশ ভূমিকা রাখে। এবং তাছাড়া জ্বর ও জন্ডিসের ক্ষেত্রে প্রতিরোধকারী আনারস বেশ উপকারী। এবং নাক দিয়ে পানি পড়া, গলা ব্যথা সহ ব্রংকাইটিসের এসব সমস্যা বিকল্পে আপনি ওষুধ ব্যতীত আপনি আনারসের রস খেতে পারেন।

শরীরে ওজন কমাতে সহায়তাঃ বসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও আঁশ৷ আনারসে ফ্যাট না থাকায় আপনি পরিমাণ মতো আনারস খেলে অথবা আনারসের জুস খেলে, যা আমাদের শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। এবং আনারস আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে আনার ভালো কাজ করে থাকে। এবং আমাদের মানবদেহে রক্ত জমাট বাঁধতে থেকে বাধা সৃষ্টি দেয় এই ফল। যার ফলে শিরাধমুনের মধ্য দিয়ে শরীরে বিভিন্ন ভাবে সঠিকভাবে রক্ত প্রবাহিত হতে পারে।

দাঁত ও মাড়ি সুরক্ষায়ঃ আনারসে রয়েছে ক্যালসিয়াম যা আমাদের দাঁতের সুরক্ষা রাখতে ভালো কাজ করে। এবং নিয়মিত আনারস খাওয়ার ফলে দাঁতের জীবাণু সংক্রমণ কম হয়, এবং দাঁত ভালো থাকে। আমাদের দাঁত ও মাড়ি যে কোন সমস্যা সমাধান রাখতে আনারস বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

ত্বকের যত্নে আনারসঃ আনারসে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি, তা থেকে আমাদের শক্তি যোগান দিয়ে দেয়। রয়েছে প্রোটিন যা আমাদের মৃত কোষ দূর করে। এবং ত্বককে পুঁচকে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। এবং এছাড়াও আমাদের ত্বকে ব্রণ ও তৈলাক্ত ভাব দূর করে উজ্জল ও রুপ লাবণ্যময় আনারসের যথেষ্ট কদর রয়েছে।

চোখে যত্নে আনারসঃ আমাদের চোখে রেটিনা নষ্ট হয়ে যায় ধীরে ধীরে যাওয়া রোগ হচ্ছে ম্যাকুলার ডিগ্রেডেশন , এবং এই রোগটি থেকে আমাদের রক্ষা করে। আনারসের বেটা কেরাটিন থাকে।এবং প্রতিদিন আনারস খেলে রোগ গুলো হাওয়া থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে। যার ফলে সুস্থ রাখে আমাদের চোখ।

হাড়ের সমস্যা জমিতে রোগ প্রতিরোধঃ আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা আমাদের হাড়ের গঠনে বেশ ভালো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।এবং আনারসের থাকা ম্যাঙ্গানিজ হাড়কে মজবুত করে থাকে। তাই আপনার খাবার তালিকায় পরিমিত, এবং পরিমাণ মতো আনারস রাখলে আপনার হাড়ে সমস্যা জনিত যে কোন রোগ ও প্রতিরোধ করা সম্ভব রাখে।

ক্যান্সার প্রতিরোধঃ ফ্রি রেডিকেল অথবা মুক্ত মূ আমাদের মানব দেহের কোষের ওপর বিরূপভাবে ক্রিয়ার সৃষ্টি করে যা  র ফলে ক্যান্সার ও হৃদরোগের মতো ক্ষতিকারক ও মারাত্মক রোগ দেখা দিতে পারে। এবং দেশি আনারসে রয়েছে উচ্চ তাপমাত্রা যা পানিতে দ্রব্যনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি এবং পানিতে দ্রবনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, থাকাই আমাদের দেহকে ফ্রি রেডিকেল বা মুক্তমূলক থেকে রক্ষা করতে প্রদান করে। তার ফলে আমাদের দেহে হৃদরোগের মতো মারাত্মক রোগ গুলো থেকে বাসা বাঁধে বাধাগ্রস্ত হয়ে থাকে।

আনারস খেলে কি ক্ষতি হয়? 

রক্ত তরল করার জন্য ওষুধ হিসেবে আনারস কে ব্যবহার করা হয়। যার ফলে আনারস আমাদের দেহে রক্ত জমাট বাধার  প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে থাকে। এবং কারো কারো এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে।এবং তাদের  আনারস খাওয়া মোটেও একদম উচিত নয়। 

রাতে আনারস খেলে কি হয়? 

আনারস ফল আমাদের শরীরে বিভিন্ন কাজে লাগে। এবং এটিতে রয়েছে অ্যাসিডে পরিপূর্ণ।এবং আমাদের রাতে খাওয়া মোটেও উচিত হবে না এবং এটাকে এড়িয়ে চলাই উচিত। এবং রাতে আনারস খাওয়ার ফলে পেট ফাঁপা ও নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি বদহজমও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

আনারস খাওয়ার নিয়ম 

প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকায়,এবং অনেক কম ফ্যাট রয়েছে। সকালে যে কোন খাবার অথবা ফলমূল খাওয়ার সময়, আনারস ব্যবহার অথবা  আনারসের সালাদ, আনারসের জুস, খেলে অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। এবং আপনি যদি ওজন কমাতে চান তাহলে আনারস খেতে পারেন। এবং গবেষণা থেকে জানা যায় যে, আনারসে ম্যাকুলার ডিগ্রেডেশন থাকায় আমাদের রক্ষা করে থাকে। 

আনারসের অপকারিতা সমূহ

আনারসে অনেক উপকারিতা থাকলেও অপকারিতা রয়েছে যা আমরা অনেকেই জানিনা, অবশ্যই আনারস খাওয়ার আগে আমাদের অপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে।আসুন জেনে নিই আনারসের অপকারিতা গুলো।
  • আনারসে থাকা অনেক উপকারিতা হলেও, এটি সবার ক্ষেত্রে সুট করে না। অনেকের আনারস থেকে এলার্জি ও বিভিন্ন সমস্যা চুলকানি, ফুসকুড়ি ইত্যাদি হতে পারে।
  • আনারসে থাকায় প্রাকৃতিক চিনি ও মিষ্টির কারণে, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি অনেক ক্ষতিকারক। আনারসে অতিরিক্ত চিনি থাকার ফলে আমাদের মানব দেহে রক্তের চিনের পরিমাণটা বাড়িয়ে দেয়। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আনারস বেশি না খাওয়াটাই উচিত এবং সপ্তাহে ১/২ খেতে পারেন।
  • আনারস একটি এসিডিক ফল।যার ফলে আপনি খালি পেটে আনারস খেলে পেটে অনেক ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।অনেকেই জানি আনারস আর দুধ নাকি একসাথে খাওয়া যায় না, এটি একদমই কুসংস্কার। এবং এখন পর্যন্ত আনারসের সঙ্গে রাসায়নিক যুক্ত কোন বিক্রিয়া খুঁজে পাওয়া যায়নি। যার কারনে আপনি একসাথে খেলে জীবন হানি করবে। এবং বর্তমান সময়ে অনেকেই খাবারে সাথে দুধ ও আনারস একসাথে মিশাই থাকে,যা সারা বিশ্বেই খেয়ে থাকে।এবং কোন গ্যাস্ট্রিকের রোগী যদি খালি পেটে আনারসের সাথে দুধ খায় তাহলে তার পেটে প্রচুর পরিমাণে ব্যথা ফুড ট্যাবু হওয়া সম্ভব থাকে।
  • এবং রক্তের তরল করার কাজে যে ওষুধ বানানো বা তৈরি করা হয়, তা আনারস ব্যবহার করে থাকে। যার ফলে এই ফলটি দেহে রক্ত জমাট বাধা থেকে প্রতিক্রিয়া প্রদান করে থাকে। রমজাদের এ সকল সমস্যা রয়েছে এবং ভুগছেন তারা অবশ্যই আনারস খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

লেখকের মন্তব্য

আনারস একটি পুষ্টিকর ফল যে আমাদের দেহকে সুস্থ রাখতে ভালো কার্যকারী ও অতুলনীয়। এবং খেতে অনেক মজাদার ও মিষ্টি যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়া বিভিন্ন পুষি উপাদান রয়েছে যা আনারসের কোন বিকল্প নেই।তাই আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় একটি করে যে কোন ফল রাখলে মন্দ হয় না। তাই আপনি চাইলে প্রতিদিন এর খাবারের সাথে আনারস রাখতে পারেন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
1 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
  • Md Sirajul Islam
    Md Sirajul Islam April 19, 2024 at 4:03 PM

    আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url