মিষ্টি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

আজকে আমরা মিষ্টি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। মিষ্টি তে কি কি উপাদান ও গুনাগুন রয়ছে তা সম্পর্কে জানবো। কারণ কম বেশি মিষ্টি আমরা সবাই পছন্দ করে থাকি , আমাদের সবার প্রিয় খাবার মিষ্টি।
মিষ্টি খাওয়ার অপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
মিষ্টি কেউ পছন্দ করে না, এইরকম মানুষ পাওয়া কুব কষ্টের, কারণ ছোট থেকে বড় সবাই মিষ্টি পছন্দ করেন। এবং সবাই মিষ্টি খুব মজা করে খেতে ভালবাসেন। কিন্তু আমরা সবাই মিষ্টি খেলেও মিষ্টি এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে কয়জন জানি বলেন । তাই অবশ্যই মিষ্টি খাওয়ার উপকারিতা গুলো আমাদের জানা দরকার। আসুন আজ আমরা মিষ্টি এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানবো ।

ভূমিকা

মিষ্টি আমাদের সবার পছন্দের খাবার, মিষ্টি খেতে আমরা সবাই ভালোবাসি। মিষ্টি এসিড ক্ষরণের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। এর ফলের হজম ভালো হয়। মিষ্টি খেলে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে মানসিক স্বাস্থ্য অনেক উন্নত হয়।মিষ্টি খেলে শরীরের শক্তি প্রদান করে থাকে।
 
মিষ্টিতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, যা আমাদের শরীরে তাপমাত্রা এনার্জি প্রদান করে এবং আমাদের শরীরে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে থাকে। মিস্তিতে আরও অপকারিতা রয়ছে সে গুলো সম্পর্কে আজ বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাহলে আসুন আমরা জেনে নি মিষ্টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

মিষ্টির পুষ্টির উপাদান

মিষ্টি তৈরি করতে দুধ, ছানা ব্যবহার করা হয়। এবং যার ফলে প্রোটিন, ফ্যাট ও আরো বিভিন্ন ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম রয়েছে। মিষ্টিতে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে এবং ও চিনি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এইজন্য মিষ্টিতে ক্যালরি বেশি অংশে শর্করা হয়ে থাকে। এবং মিষ্টিতে প্রচুর পুষ্টি অবদান রয়েছে।

মিষ্টি খেলে কি ওজন বাড়ে?

মিষ্টি  সবাই খেতে  পছন্দ করে, কিন্তু মিষ্টি অনেক ফ্যাট জাতীয় খাবার, যা খেলে আমাদের শরীরে অতিরিক্ত  চর্বি বাড়িতে সাহায্য করে। যা আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ওজন বাড়ে,এই মিষ্টি খাওয়ার ফলে। অনেকে খাওয়ার পরে মিষ্টি জাতীয় জিনিস খাবার খেয়ে থাকেন, অতিরিক্ত মিষ্টি স্বাস্থ্যের জন্য কি আদৌ ভাল, নাকি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর! 

মসলার দেখতে ঝাল কোন খাবার খাওয়ার পরে,বৃষ্টি জাতীয় কোন জিনিস খান, এতে কোন ক্ষতি প্রভাব ফেলবে না। এবং বিশেষজ্ঞ মতে মসলাযুক্ত খাবার খেলে অ্যাসিড ক্ষরণের  পরিমাণটা বেড়ে যায়। এবং এই কারণে খাবারের পর মিষ্টি খেলে এসিড ক্ষরণের পরিমাণটা অনেকটা কমিয়ে দেয়। এবং মিষ্টি জাতীয় যে কোন খাবার খেলেই,শরীরের  ফ্যাটের পরিমাণটা অনেকটা বেড়ে যায়। আমাদের শরীরে অতিরিক্ত মিষ্টি কখনোই শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।  

মিষ্টির খাওয়ার উপকারিতা

সাধারণত আমাদের ধারণা হয়ে থাকে যে,যারা বেশি মিষ্টি খায় তাদের ডাইবেটিস, হৃদরোগ ও ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। স্বাস্থ্য ও সমস্যার জন্য শর্করা জন্য দায়ী নাও হতে পারে।এবং যার ফলে আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে এই শর্করা। বিজ্ঞানেরও গবেষণা করে দেখেছেন,শতকরা উচ্চ মাত্রার ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবারের সাথে না খেলে এটা ক্ষতিকর নয়।
মিষ্টিতে ব্যবহার করা হয় দুধ ও ছানা। এবং যার ফলে আমাদের দাঁত ও হাড়ের গঠনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • এবং ১০০ গ্রাম মিষ্টিতে প্রায় ১৮৬ ক্যালরি রয়েছে। যা বেশির ভাগই ১৫৩ ক্যালোরি আসে শতকরা থেকে।যার ফলে আপনার শক্তি সরবরাহ করে তাৎক্ষণিকভাবে।
  • যেকোনো মিষ্টি খাবার খেলে,আমাদের শরীরের সেরিটোনিন নামের হরমোনটি ক্ষরিত হয়ে থাকে।যার ফলে এই হরমোন নিউ রোট্রান্সমিটার হিসাবে কাজ করে থাকে। এবং এই জন্য মিষ্টি খাবার খেলে আমাদের সুখ ও আনন্দময় অনুভূতি জেগে উঠে। এবং এ আনন্দটা আমাদের শরীরের জন্য সুস্থ থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরী।
  • আমরা কোন কিছু খাবার পরে,সেই খাদ্য হজম করার জন্য, আমাদের পাকস্থলীতে এসিড ক্ষরণ শুরু হয়ে থাকে।এবং ঝাল ও বেশি মসলাযুক্ত খাবার খেলে এই এসিডের কারনের পরিমাণটা বেশি বাড়ে। এবং অতিরিক্ত এসিড খননের কারণে পরিপাক ও ক্রিয়া ব্যবহার হতে পারে।এবং পরিপাকতন্ত্রের যে কোনো বিভিন্ন অসুখ দেখা দিতে পারে।এইজন্য মিষ্টি যত খাবারগুলোতে এসিড ক্ষরণের পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে থাকে।যার ফলে আপনার শরীরে পরিপাক ক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়ে পারে।
  • এবং আমরা যখন তৈলাক তো কোন খাবার খেয়ে থাকি, তেলে ভাজা খাবার খাওয়ার পরে শরীরের রক্তচাপ অধিকাংশ কমে যায়। এবং এ অবস্থাতে মিষ্টি জাতীয় খাবার গুলো আপনার শরীরে রক্তচাপকে স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে থাকে। যার ফলে আমরা স্বস্তি পাই।
  • কিছু কিছু গবেষণা করে দেখা গেছে যে, বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে ছাদের ওপরে এই স্মৃতিশক্তি বাড়াতে খুব দ্রুত কাজ করে থাকে,যার ফলে কাজ করার ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

মিষ্টি খাওয়ার অপকারিতা

  • মিষ্টিতে দুধ, ছানা ছাড়া আরো রয়েছে চিনি, ও গুড় তৈরি সমৃদ্ধ শর্করা সম্পূর্ণ দ্বারা ক্যালোরি শর্করা হয়। এবং এই প্রকারের মিষ্টি গুলো শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়।
  • এবং আমরা জানি যে অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়া শরীরের জন্য ভালো না।কারণ অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো হয় না। এবং অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে মেদ ভুড়ি,ও চর্বি বাড়তে সাহায্য করে। এবং ভবিষ্যতে নানা রকমের রোগের কারণ হতে পারে। এবং মিষ্টি জাতীয় যেকোনো খাবার আপনার শরীরে বাড়াতে সাহায্য করে।
  • অনেকবার গবেষণা করে দেখা গেছে যে, খাবারের ভিতরে যদি ১৫০ গ্রাম এর বেশি ফ্রূকটোজ থাকে, শরীরের জন্য উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টলের মতো সমস্যা ঝুঁকি বাড়ায় দিয়ে থাকে।
  • মিষ্টি শুধু সুগারের জন্য নয়, স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। এবং গবেষণায় দেখা গেছে ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবারের সাথে যদি উচ্চমাত্রায় শর্করা সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া যায়। যা খেলে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
  • আমরা যে কোন স্বাস্থ্যকর ফল, যাতে শর্করা আছে এগুলোর সাথে কোমল পানি গুলিয়ে ফেলি,যাতে এসব বাড়তি শতকরা গুলো ছাড়া কোন পুষ্টিকর উপাদান নাই। কিছু জরিপে কথা বলা হয়েছে যে বেশি বেশি কোমল পানি খাওয়ার ফলে বা ফলের রস খেলে স্মৃতিশক্তি দুর্বল ও মস্তিষ্কের গড় আয়তন কম।
  • এবং অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে কৃর্মি উৎপন্ন হয়ে থাকে। যার ফলে আমাদের সমস্যা হয়ে থাকে।
  • আবার কিছু কিছু মিষ্টিতে কৃত্রিম রং ব্যবহার করে থাকে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুব ক্ষতিকর ও ক্যান্সারের ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে।

পরামর্শ দিকগুলি

অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ফলে, শরীরের উচ্চ রক্তচাপ,ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ হতে পারে। তাই এদের জন্য মিষ্টি খাবারগুলো পরিহার করা উচিত। এবং যাদের রক্তচাপ কমে গেলেও এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা অনেক সময় কমে যায়। এবং এ অবস্থাতে পরিমাণমতো মিষ্টি খেতে পারবে। শারীরিক পরিশ্রমী মানুষদের জন্য এবং শক্তি যোগানোর জন্য ভালো উৎস হলো মিষ্টি। এবং বিশেষ করে পরিশ্রমে পেশাজীবীদের চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে মিষ্টি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

খালি পেটে মিষ্টি খেলে কি হয়? 

আমরাও অনেকেই সকালে অলসতার কারণে, খুদা নিবারণের জন্য খালি পেটে মিষ্টি খেয়ে থাকে। কিন্তু আপনি কি ভেবে দেখেছেন এর ফলে আপনার ক্ষতি হতে পারে।আসুন জেনে নেই  সকালে মিষ্টি খেলে কি হয়। 
  • সকালে মিষ্টি খাওয়ার ফলে, ইনসুলিনের এটা অনেকটা বেশি যাওয়ার  ফলে আশঙ্কা থাকে। 
  • এবং অগ্ন্যাশয়ের এর উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। যার ফলে ডায়াবেটিস বাড়ার আশঙ্কা থাকে। 
মিষ্টি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা দুটাই রয়েছে। যার শরীরে কন্ডিশন বোঝে মিষ্টি আমাদেরকে খেতে হবে।এতে শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব  কম ফেলবে।

অতিরিক্ত মিষ্টি খেলে ত্বকে যে সব সমস্যা হতে পারে 

  • মিষ্টিতে রয়েছে গ্লাইসেমিক, ইনডেক্সের পরিমাণটা একটু বেশি হয়ে থাকে। যার ফলে অল্পতে বয়সের ছোপ ছোপ দাগ পড়ে যায়।
  • অতিরিক্ত মিষ্টি অথবা,মিষ্টি জাতীয় জিনিস বেশি পরিমাণ খেলে, ফলে ত্বকের র‍্যাস বের হয়।
  • এবং অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ফলে হতে পারে এগজিমা, সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের বিভিন্ন অসুখ।
  • যাদের ত্বকে ব্রণের রয়েছে, তাদের মিষ্টি একদম ক্ষতিকর।কারণ মিষ্টি খাওয়ার ফলে ব্রণের প্রবণতা বাড়ে।
  • অনেক সময় ত্বকের যত্ন নেওয়ার ফলে, ত্বক শুষ্ক ও নিষ্প্রাণ লাগে। মিষ্টি অথবা চিনি জাতীয় কোন জিনিস খেলে,ত্বকে আদ্রতা স্বাভাবিকভাবে হারায় ফেলে। অতএব আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।

লেখকের মন্তব্য

উপরের মিষ্টি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানলাম। এবং বেশি মিষ্টি খাওয়ার ফলে কি কি হতে পারে সে সম্পর্কে জানলাম। এবং অপকারিতা গুলো কি কি সেটাও জানলাম। অবশ্যই আমরা অতিরিক্ত কোন কিছুই খাব না। প্রত্যেক কিছুই যেমন উপকারও রয়েছে অপকারও রয়েছে। 

মিষ্টিতে যেমন পুষ্টি রয়েছে তেমন ক্ষতিকারক দিকগুলো রয়েছে, তাই নিয়ম মেনে মিষ্টি খাব। অতিরিক্ত মিষ্টি আমাদের দেহের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। কিন্তু আপনি দৈনিক ২/১ মিষ্টি খেলে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকার। তাতে আমাদের দেহ সুস্থ থাকবে মন ভালো থাকবে। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে এই মিষ্টি সম্পর্কে, সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url